গরমে শহর কিংবা উপকূলীয় এলাকা, সবখানেই জনজীবন বিপর্যস্ত

প্রচণ্ড গরমে শ্রমিকেরা। দক্ষিণ সস্তাপুর, নারায়ণগঞ্জ, ১৩ এপ্রিল
ছবি: দিনার মাহমুদ

প্রচণ্ড গরম, কাঠফাটা রোদে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জনজীবন। রমজান মাসে এই গরমে রোজাদারদের জন্য আরও বেশি অসহনীয়। আবহাওয়া অফিস বলছে, এই গরম আরও কয়েক দিন অব‍্যাহত থাকবে। তীব্র গরমে অসংখ্য মানুষ রাস্তা-ঘাট অথবা ফুটপাতে পচা-বাসি খাবার খেয়েও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। প্রচণ্ড গরমে ঢাকাসহ বড় বড় শহরে যে যানজট লেগে থাকে তা তো আরও বেশি অসহনীয় অবস্থা তৈরি হচ্ছে।

শহরগুলোতে ধুলাবালির কারণে শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষের কাজকর্মে দেখা দিয়েছে অনীহা। সমাজের এই সব মানুষ ৪০-৪১ ডিগ্রি°সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্রচণ্ড গরমেও মাথার ঘাম ফেলে কাজকর্ম করে যাচ্ছেন। অনেক সময় টিভি অথবা পত্রিকায় খবরে উঠে আসে শ্রমিক নির্যাতন, সময় মতো মজুরি না দেওয়ার অভিযোগ। এমনকি শ্রমিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করাও হয় এই সভ‍্য সমাজে।

দিনভর প্রচণ্ড রোদ ও গরমে শ্রমজীবী মানুষের সাথে মালিকপক্ষের সহনীয় আচরণ করা এবং শ্রমজীবী মানুষদের সময় মতো ন্যায্য বেতন পরিশোধ করাই কাম্য। অনেকে ঈদের আগে পরিবারের মুখে হাসি ফোটানো জন‍্য প্রচণ্ড গরমে বাধ্য হয়ে কাজ করে যাচ্ছে।  কী কষ্ট তাদের। নিশ্চয় এই সকল মানুষদের আমাদের সবার সম্মান করা উচিত।

শুধুই শহর এলাকায় নয়, তীব্র গরমে জনজীবন যেন দক্ষিণাঞ্চলেও বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে। খুলনার পাইকগাছা, কয়রা, দাকোপ, বটিয়াঘাটাসহ বেশ কয়েকটি উপকূলীয় উপজেলাতেও তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে। তীব্র গরমে নারীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে স্থানীয় মিঠাপানির পুকুরগুলোতে ছুটতে দেখা যায়।

উপকূলীয় অঞ্চলে পানির সংকট দূরীভূত করার জন‍্য টিউবওয়েলের পানির আশা করা হয় কিন্তু বেশির ভাগ টিউবওয়েলগুলোতে পানি লবণাক্ততা, আর্সেনিক, যা খাওয়া ও ব‍্যবহারে অযোগ্য। সম্প্রতি সরকার এবং বিভিন্ন এনজিও সংস্থার উদ্যোগে পানির ট‍্যাংক বিতরণ করা হয়েছে। তবে সেগুলোর পরিমাণ আরও বাড়ানো দরকার আছে বলে মনে করি।

শুধু তাই নয়, দক্ষিণাঞ্চলের চিংড়ি ঘেরগুলোতেও প্রচণ্ড পানির সংকট দেখা দিয়েছে। প্রচণ্ড তাপে এখানকার অধিকাংশ ঘেরে চিংড়ি মারা যাচ্ছে। চিংড়িচাষিরা লোকসানের মুখে পড়ছে। ইতিমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের বড় শিকার হয়েছে তারা। সরকার এবং এনজিও সংস্থাগুলোর উচিত হবে, প্রতিকূল অবস্থা চাষিদের চিংড়ি চাষ প্রশিক্ষণ দেওয়া।

মো. আরিফুল ইসলাম
পাইকগাছা, খুলনা
শিক্ষার্থী
শহীদ আয়ুব ও মুসা মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ