কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যখন ব্যক্তিজীবনে প্রভাব ফেলে

বর্তমান সময়কে তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনের স্বর্ণযুগ বলা যেতে পারে। প্রযুক্তিকে বাদ দিয়ে একটা সকালও কল্পনা করতে আমরা ভয় পাই। প্রযুক্তি–নির্ভরতার যুগে আমরা সবাই চাই একটু আরাম পেতে। বিজ্ঞান তা আমাদের খুব সহজ করে দিয়েছে।

বিজ্ঞানের এই গতিধারা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলার পথকে যেমন সহজলভ্য করে তুলেছে, ঠিক তার বিপরীত প্রভাবটাও আমাদের জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ের সেরা আবিষ্কার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স তথা এআই।

প্রযুক্তির এ আবিষ্কার বর্তমান সময়ে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, নিজের ভুল স্বীকার করা, অনুপযুক্ত বিভিন্ন বিষয় প্রত্যাখ্যান করতে সক্ষম এআই। এর যেমন ভালো দিক রয়েছে, ঠিক তেমনি রয়েছে খারাপ দিক। যার কাজ হচ্ছে মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাশক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রদর্শন করে দেখানো। যার ফলে আমরা সারা দিন কী চিন্তা করি, কী ধরনের ওয়েবসাইট ব্যবহার করি, কী করতে পছন্দ করি, কোন জিনিসগুলো সোশ্যাল মিডিয়াতে অনুসরণ করি, তার সবকিছুই এই এআই দিয়ে তত্ত্বাবধান করে। যা সে পরবর্তী সময়ে আমাদের সামনে বারবার ফুটিয়ে তোলে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা আমরা ব্যক্তিজীবনে উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তও হয়ে থাকি। এআই সফটওয়্যার বা অ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্ন মানুষের ছবি এডিট করে সেখানে অশ্লীল বা নগ্ন ছবি বা ভিডিও বানিয়ে দেওয়া যায় খুব সহজে। যার ভুক্তভোগী ইতিমধ্যে অনেকেই হয়েছেন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অপব্যবহারের ফলে অনেক প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। ভবিষ্যতে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে এই সফটওয়্যারটি ব্যবহারের ফলে। একটা সময় এ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সব নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসবে।

এআই সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের উচিত কিছু নীতি তৈরি করা, যাতে করে সাধারণ মানুষ এর অপব্যবহার করতে না পারে। এ ব্যাপারে নিজ দেশের সরকারের আইটি ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, পুলিশ প্রশাসন এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সমন্বয়ে একটি আইন চালু করা উচিত। যাতে করে ভুক্তভোগীদের করা অভিযোগে অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা যায়।

শায়লা জান্নাত ফারিহা

শিক্ষার্থী, সমাজতত্ত্ব বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়