শীতের আগমনের সঙ্গে শুরু হয় খেজুর গাছ পরিষ্কার আর রস সংগ্রহ। আমাদের খেয়াল রাখা দরকার খেজুর রস বা গুড় খাওয়ার আনন্দ উপভোগ করতে গিয়ে আমাদের জীবন যেন সংকটের সম্মুখীন না হয়। বলছি নিপা ভাইরাসের কথা, এই ভাইরাসটি বাদুড় থেকে খেজুরের রসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ছড়ায়। যখন রস সংগ্রাহক গাছে হাঁড়ি বসায় তখন অনেক প্রাণী রস দিয়ে তাদের পিপাসা মিটাতে আসে, যেমন বাদুড়, সাপসহ নানা প্রজাতির পশুপাখি। এই ভাইরাস বাদুড়বাহিত তাই যখন কোনো হাঁড়িতে বাদুড় মুখ দেয়, তখন এই ভাইরাস রসের মধ্য দিয়ে মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ে।
নিপা ভাইরাস প্রথম ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ায় ধরা পড়ে। পরে ১৯৯৯ সালে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারত ও বাংলাদেশে এটি বিরাজমান। বিশেষ করে শীতকালে এটি ছড়িয়ে পড়ে।
বাংলাদেশে প্রথম ২০০১ সালে এই ভাইরাসের সংক্রমণ পরিলক্ষিত হয়। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩২৬ জন সংক্রমিত হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ২৩১ জনই প্রাণ হারিয়েছেন। তাই আমাদের শীতকালীন জীবনকে উপভোগ্য করতে, কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে নিজেদের হাঁটাকে জারি রাখতে প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সচেতনতা। যখন রস সংগ্রাহকেরা গাছে হাঁড়ি বসান তাঁদের উচিত হাঁড়ির মুখে একটি পাতলা কাপড়ের টুকরো ব্যবহার করা।
এরপরেও কোনোভাবে কাঁচা রস খাওয়া যাবে না। আমাদের উচিত, খেজুরের রস ব্যবহারের পূর্বে তা পরিশোধন করা ও আগুনে সিদ্ধ করার মাধ্যমে মরণব্যাধি নিপা ভাইরাস রুখে দিয়ে জীবনকে আতঙ্কমুক্ত রাখা।
নুর হোসেন তানভীর
শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।