এমন বৃক্ষপ্রেমিক কোথা পাই

শ্রাবণ মাসেও বৃষ্টির অভাব প্রকট। বৃষ্টি নেই বলেই কি বিভিন্ন ফলের গাছ রোপণ করার সুযোগ নেই! প্রতি বছর হাট–বাজারে আম, জাম, জামরুল, আতা, কাঁঠাল, নারকেল, কামরাঙ্গা, আঁশফল, পেয়ারা প্রভৃতি ফলের গাছের চারা বিক্রি করতে আসত বিক্রেতারা। কিন্তু এবার তাদের দেখা নেই। ফুল, ফলের চারা ক্রয়ের ক্রেতা নেই। বিক্রিতে দেশের বিভিন্ন স্থানের নার্সারিগুলির মাথায় হাত।

বন বিভাগের উদ্যোগে গাছপালার চারা রোপণ করা হয়। অবহেলা-অযত্নে অনেক গাছের চারা মরে যায়। পানির অভাবে অথবা বেড়া না দেওয়ায় গরু–ছাগলের আহার হয় গাছগুলো। তাছাড়া গাছের চারাগুলো লম্বা নয়, বেঁটে। বেড়ে উঠতে সময় লাগে। 

একটা সময়ে বৃক্ষরোপণে দেশে ব্যাপক সাড়া পড়ে গিয়েছিল। আজ যেন তেমনটি নেই। মনে হয় যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আগের মতো উৎসাহ নেই। সাধারণ মানুষের মধ্যেও সেই আগ্রহ নেই। 

বরং বৃক্ষ নিধনে অনেকে অভিযুক্ত হচ্ছেন।

সারা বছর বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি চাই। বৃক্ষ পরিচর্যা সারা বছর চালু রাখতে হবে। বৃক্ষ নিধনের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।

ভারতে একবার একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি বৃক্ষরোপণ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য কাশ্মীর থেকে কোহিমা পর্যন্ত পাঁচ হাজার কিলোমিটার পথ হেঁটেছিলেন। বৃক্ষ নিধন বন্ধ করতে সেই বিশিষ্ট ব্যক্তি দীর্ঘদিন অনশনও করেছিলেন। তিনি তো অন্য দেশের বৃক্ষপ্রেমিক।

আমাদের বাংলাদেশে এমন একজন বৃক্ষপ্রেমিক দেখলাম না। তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত হেঁটে প্রতিবাদ না হোক, ঢাকা মহানগরীর এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত হেঁটে প্রতিবাদ করে বলতে শুনলাম না, ‘গাছে গাছে ভরে দাও ঢাকা।’

উষ্ণায়ন ঠেকাতে বৃক্ষরোপণ করতে হবে দেশবাসীকে। ঢাকায় বর্ষাকাল ফিরিয়ে আনতে গাছে গাছে ভরিয়ে দিতে হবে গোটা শহর। কোনো খালি জায়গা বাদ রাখা যাবে না। ভবনের ছাদগুলোও সবুজে সবুজে ছেয়ে যাক। 

লিয়াকত হোসেন খোকন 

রূপনগর, ঢাকা