সর্পদংশন: এক উপেক্ষিত স্বাস্থ্য সমস্যা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের (এনসিডিসি) পরিচালিত জরিপের তথ্যমতে, ২০২১-২২ সালে চার লাখ তিন হাজার মানুষকে সাপে দংশন করে এবং তার মধ্যে সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে। সর্পদংশনে এত সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর কারণ হিসেবে মূলত চিকিৎসার বেহাল দশাকেই দায়ী করা যায়।

সাপের কামড়ের ওষুধ বা বিষ প্রতিষেধক হচ্ছে অ্যান্টিভেনম। বাংলাদেশে ব্যবহৃত অ্যান্টিভেনমগুলো বেশির ভাগ ভারত থেকে আমদানিকৃত। তবে বাংলাদেশের ও‌ ভারতের সাপের বিষের প্রকৃতি এক না হওয়ায় অ্যান্টিভেনমগুলো বাংলাদেশি সকল সাপের বিষ ধ্বংসে খুব বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে না। উপরন্তু জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসকেরা সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে দক্ষ নয়।

সর্পদংশনের শিকার হওয়া অধিকাংশ মানুষই গ্রাম অঞ্চলের। সম্প্রতি রাসেল ভাইবার বা চন্দ্রবোড়া সাপের উপদ্রব বাংলাদেশে বেড়েছে। প্রায়শই এই সাপ দ্বারা মানুষের আক্রান্তের খবর মেলে। এই ধরনের সাপ দংশন করলে দ্রুততার সঙ্গে অ্যান্টিভেনম না নিলে মৃত্যু অবধারিত। কাজেই দেশে‌ এ ধরনের সাপের উপস্থিতি বিশেষত গ্রামাঞ্চলের মানুষদের জন্য রীতিমতো অশনিসংকেত।

সব মিলিয়ে বলা চলে, বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলের মানুষ সাপে কামড় ও মৃত্যুতে উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এই সংকট মোকাবিলাই স্থানীয়ভাবে সাপের বিষের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে অ্যান্টিভেনম উৎপাদন করতে হবে এবং বিনামূল্যে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে তার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে এই চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে হবে। আমরা সরকারের কাছে এই সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

রবিউল আওয়াল পারভেজ
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়