প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভবিষ্যতে বই পড়ার স্থান কোথায়

ডিজিটাল যুগের অগ্রযাত্রায় শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, ভবিষ্যতে কি বই পড়া থাকবে? কেউ কি বই পড়বে নাকি শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ডিজিটাল রূপ ধারণ করবে?

ইন্টারনেট ও ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসারে শিক্ষার্থীরা এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ই-বুক এবং অডিওবুকের দিকে ঝুঁকছে। প্রথাগত মুদ্রিত বইয়ের বিকল্প হিসেবে ডিজিটাল কনটেন্টের সহজলভ্যতা এবং বহনযোগ্যতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শিক্ষার্থীরা এখন যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে ই-বুক পড়তে পারে এবং অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।

তবে মুদ্রিত বইয়ের আবেদন এখনো শেষ হয়ে যায়নি। প্রথাগত বইয়ের বিশেষ কিছু সুবিধা রয়েছে যা ডিজিটাল মাধ্যম প্রদান করতে পারে না। বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টানোর অভিজ্ঞতা, বইয়ের গন্ধ এবং পাঠের সময় মনোযোগ বজায় রাখার ক্ষেত্রে মুদ্রিত বইয়ের এক অনন্য আবেদন রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক এখনো মুদ্রিত বইকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আসছে। ভার্চুয়াল ক্লাসরুম, অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম এবং ই-লার্নিং টুলের মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ সহজ হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এখন বিভিন্ন মাল্টিমিডিয়া রিসোর্স ব্যবহার করে আরও ইন্টারেকটিভ ও সমৃদ্ধ পাঠ গ্রহণ করতে পারছে।

অন্যদিকে, প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মনোযোগের অভাব এবং চোখের সমস্যার মতো স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই মুদ্রিত বই পড়ার গুরুত্ব এখানে অগ্রাহ্য করা যায় না। ভবিষ্যতে শিক্ষাব্যবস্থা একটি সংকর রূপ ধারণ করবে। ডিজিটাল মাধ্যম এবং মুদ্রিত বইয়ের সমন্বয়ে একটি আধুনিক ও দক্ষ শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে উঠবে। শিক্ষার্থীরা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সহজলভ্য তথ্যের পাশাপাশি মুদ্রিত বইয়ের গভীরতা ও ব্যাপ্তি উভয়ই উপভোগ করতে পারবে।

প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আসলেও মুদ্রিত বইয়ের আবেদন এখনো ফুরিয়ে যায়নি। মুদ্রিত বই এবং ডিজিটাল মাধ্যমের সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা ভবিষ্যতে গড়ে উঠবে। শিক্ষার্থীরা উভয় মাধ্যমের সুবিধা গ্রহণ করে আরও দক্ষ ও জ্ঞানসম্পন্ন হয়ে উঠবে।

সৌরভ হালদার
শিক্ষার্থী
ব্যবস্থাপনা বিভাগ
সরকারি ব্রজলাল কলেজ খুলনা