আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে, তা–ই নিয়ে আমাদের পরিবেশ। পরিবেশের প্রধান তিনটি উপাদান হচ্ছে—মাটি, পানি ও বায়ু। এসব উপাদান ছাড়া আমরা বেঁচে থাকতে পারি না। যেগুলো দূষিত হলেই দূষিত হয় পুরো পৃথিবী। এসব উপাদান বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের মতো আমাদের দেশেও দূষিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই পরিবেশ দূষণের কারণেই বিশ্বে প্রতিবছর মৃত্যু হয় এক কোটিরও বেশি মানুষের। আর শুধু বাংলাদেশের কথা যদি বলি, প্রতিবছর মৃত্যু হয় দুই লাখেরও বেশি মানুষ।
এই পরিবেশকে রক্ষার জন্য প্রতিবছর বিশ্ব অর্থনীতির প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় হচ্ছে। আইন প্রণয়ন করা হয়েছে বিশ্বের প্রতিটি দেশে। ১৯৭৪ সালের ৫ জুন থেকে প্রতিবছর বিশ্বের প্রতিটি দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন ও সরকার কর্তৃক দেশের পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে ‘পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) বিল ২০০২’ এবং ‘পরিবেশ আদালত (সংশোধন) বিল ২০০২’′নামের দুটি আইন পাস করলেও পরিবেশ দূষণের বন্ধে সঠিক সমাধান মেলেনি এখন পর্যন্ত।
পরিবেশ রক্ষায় বিশ্বের প্রতিটি দেশের মতো আমাদের দেশেও আইন প্রণয়ন, স্কুল–কলেজের বইতে সংযোজন, পত্রপত্রিকায় লেখার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত সচেতনতা বৃদ্ধির শর্তেও কমছে না পরিবেশ দূষণ। কিন্তু কেন এই পরিবেশ দূষণের সমাধান মিলছে না?
দেশের শিক্ষিত সমাজ যার একমাত্র কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে দায়িত্বশীলতার অভাবকে। কারণ, একজন দায়িত্বশীল মানুষ কখনো যেখানে–সেখানে ময়লা ফেলতে পারেন না। আপনি মনে করছেন, সামান্য ময়লাই তো ফেলছি; কিন্তু এই সামান্য ময়লাই অসামান্যভাবে পরিবেশের তিনটি প্রধান উপাদান মাটি, পানি, বায়ুকে দূষিত করে। প্রশ্ন হতে পারে কীভাবে? ময়লাটা যখন পুকুরে বা নদীতে ফেলেন, তখন পরিবেশ দূষিত হয়।
যখন মাটিতে ফেলেন মাটি ও বায়ু দূষিত হয়। আর যখন এই একটি কাজ করেন, তখন আমাদের দেশ, আমাদের এই পৃথিবীকেই দূষিত করেন।
পরিবেশটা কাদের? রক্ষার দায়িত্ব কাদের? পরিবেশ যদি স্বাস্থ্যসম্মত হয়, কাদের লাভ? পরিবেশ সুস্থ থাকলে সুস্থ থাকবে কাদের শরীর ও মন? সব কটির উত্তর যদি ‘আমাদের’ হয়। তাহলে আমাদের ক্ষতি আমরাই করছি কেন? আমাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী একমাত্র আমরাই।
পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে রক্ষার জন্য বেশি নয়, আমরা যদি শুধু দুটি অভ্যাস গড়ে তুলি, তাহলে পরিবেশ দূষণ থেকে আমরা সহজেই রক্ষা পাব। তাহলে নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা–আবর্জনা ফেলা। গাছ না কাটা এবং বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে।
তৃতীয় কাজ সরকারের, তা হলো নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা ময়লা–আবর্জনাগুলো সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে অথবা গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হবে। দুটি আমাদের আর একটি সরকারের—এই তিনটি কাজ যদি আমরা সঠিকভাবে করতে পারি, তাহলে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখার জন্য কোনো আইনের প্রয়োজন হবে না। পরিবেশ রক্ষায় হাজারকোটি টাকা ব্যয় করতে হবে না। সুতরাং, পরিবেশ রক্ষাই আমাদের দায়িত্বশীল হতে হবে।
ইয়াছিন আরাফাত
শিক্ষার্থী
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়