তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। পড়াশোনা, বিনোদন, যোগাযোগ—সব ক্ষেত্রেই ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের জীবনকে সহজ করেছে। তবে এই সহজ জীবনের পাশাপাশি তৈরি হয়েছে কিছু নতুন সমস্যা। এর মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো সাইবার বুলিং।
সাইবার বুলিং একধরনের মানসিক নির্যাতন, যা ইন্টারনেট, মোবাইল বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংঘটিত হয়। কারও ছবির নিচে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করা, অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত ছবি বা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া, ভুয়া আইডি খুলে অপমান করা কিংবা অনলাইন গ্রুপ থেকে কাউকে বাদ দেওয়া—সবই এর অন্তর্ভুক্ত। বারবার হুমকি দেওয়া বা অনলাইনে অনুসরণ করাও (সাইবার স্টকিং) ভুক্তভোগীর মানসিক যন্ত্রণা বাড়িয়ে তোলে।
এর প্রভাব ভয়াবহ। ভুক্তভোগী ব্যক্তি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে, আত্মবিশ্বাস হারায়, পড়াশোনা বা কাজে মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না। অনেকে পরিবার ও বন্ধুদের থেকে দূরে সরে যায়। দীর্ঘ মেয়াদে হতাশা, মানসিক রোগ এমনকি আত্মহত্যার প্রবণতাও তৈরি হতে পারে। সুস্থ ও আত্মবিশ্বাসী প্রজন্ম গড়ে ওঠার পথে এটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
প্রতিরোধে প্রয়োজন ব্যক্তিগত সচেতনতা, পারিবারিক সহযোগিতা এবং রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাইভেসি সেটিংস শক্ত রাখা, অপরিচিতদের এড়িয়ে চলা, বুলিংয়ের শিকার হলে প্রমাণ রেখে সঙ্গে সঙ্গে ব্লক ও রিপোর্ট করা জরুরি। বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার পুলিশ সেন্টারের মাধ্যমে সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত না করলে এই সমস্যা থামানো সম্ভব নয়।
মরিয়ম ফেরদৌস
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়