বাউবি আইন প্রোগ্রামের দুর্দিন কি শেষ হবে না?

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) দেশের একমাত্র দূরশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে বাউবিতে মোট ৬৭টি একাডেমিক প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। বাউবির শিক্ষা কার্যক্রম আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে পৌঁছে গেছে এবং এক বিরাট সাফল্য অর্জন করে চলেছে।

বাউবিতে ২০১৪ সালে আইন প্রোগ্রাম আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না থাকায় বাউবি আইন প্রোগ্রাম বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত। স্থগিত হওয়া ‘স্কুল অব ল’ সেশনজট, মাত্রাতিরিক্ত সেমিস্টার ফি, লাইব্রেরিতে আইনের বইয়ের সংকট, অদ্যাবধি পর্যন্ত একটা ডিবেট ক্লাব ও মুট কোর্ট গঠন না হওয়াসহ বিভিন্ন রকম সমস্যা রয়েছে।

একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে মুট কোর্ট, ডিবেট ক্লাব একটা অতীব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় ডিবেট ক্লাবের সঙ্গে জড়িত থাকলে একজন শিক্ষার্থী নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে এবং পেশাগত জীবনে কাজ করার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে এগিয়ে থাকে এবং অনেক ইতিবাচক গুণাবলি অর্জন করতে পারে।

আবার মুট কোর্ট একজন শিক্ষার্থীর অ্যাডভোকেসি দক্ষতাকে ধারালো করে, নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জনে সহায়তা করে এবং দল গঠন করে দলীয়ভাবে কাজ করার মানসিকতা গড়ে তোলে।

অথচ দুর্ভাগ্যজনক কথা হলো, বাউবিতে আইন প্রোগ্রাম আজ ১০ বছর অতিক্রান্ত করলেও কোনো ডিবেট ক্লাব, মুট কোর্ট গঠিত হয়নি। শিক্ষার্থীরা বারবার মুট কোর্ট, ডিবেট ক্লাব গঠনের উদ্যোগ নিলেও মাননীয় শিক্ষকদের দিক থেকে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় তা আজও চালু হয়নি। যার ফলে শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিকভাবে আইনি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এ ছাড়া বাউবি ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্র লাইব্রেরিতে আইনের বইয়ের প্রচুর সংকট রয়েছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা দায়িত্বরত ব্যক্তিদের লাইব্রেরিতে বই প্রদানের জন্য বারবার অবহিত করলে সেখানেও শুধু আশ্বাস পাওয়া যায়। অথচ লাইব্রেরিতে এখনো আইনের বই আজও প্রদান করা হয়নি।

একজন আইনের শিক্ষার্থী হিসেবে বারবার প্রশ্ন জাগে, বাউবি কেন বারবার আইনের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে? শেষে এতটুকুই বলব, বাউবি আইন প্রোগ্রামে দ্রুত ডিবেট ক্লাব, মুট কোর্ট চালু করা হোক এবং লাইব্রেরিতে আইনের বই প্রদান করা হোক।

মো. লিটন হোসেন
শিক্ষার্থী, আইন প্রোগ্রাম
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়