প্রতিবছর প্রাইমারি স্কুলগুলোতে অনুষ্ঠিত হতো বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। সেখানে আরও অনুষ্ঠিত হতো গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো যেমন হাডুডু, ঘোড়দৌড়, লাঠিখেলা, নৌকাবাইচ, সাইকেল খেলা, ফুটবল প্রভৃতি খেলা। কিন্তু আজ কালের বিবর্তনে হারিয়ে ফেলছে গ্রামবাংলা তার সব অতীত ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি।

এখন গ্রামের অনুন্নত রাস্তাঘাট উন্নত হয়েছে। গ্রামে আর ছোট ছোট টিনের বা খড়ের বেড়ার কোনো ঘর নেই। নেই আগের গরু ও গরুর গাড়ি। এখন শহরের মতো ইট–পাথরের যান্ত্রিক দৃশ্য আমরা গ্রামেও দেখতে পাই।

দালানে দালানে ভরে গেছে প্রতিটি গ্রাম আজ। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় গ্রামের গাছগুলো আজ ফলহীন। আবাদি জমি দখল হচ্ছে, ভরাট করে চলছে আবাসস্থল গড়ার কাজ।

গ্রামবাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দেশি মাছের ঝাঁক—সরপুঁটি, ম‌লা, ঢেলা, টাকি, ট্যাংরা, কই প্রভৃতি সুস্বাদু মাছগুলো। আবাদি জমিতে এখন মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে দেশি মাছ আর বেঁচে থাকার উপযুক্ত পরিবেশ পাচ্ছে না। ফলে আজ দেশি মাছ বিলুপ্তির পথে।

এভাবে গ্রামবাংলা তার হাজার বছরের ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছে আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই ঐতিহ্য রূপকথার গল্প হয়ে যাচ্ছে।

গ্রামবাংলার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার মতো কোনো প্রচেষ্টা কি আমরা করতে পারি না?

সাদিয়া আফরোজ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
রংপুর সদর, রংপুর