শিক্ষকদের পেছনে রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন সম্ভব?

শিক্ষকতা পেশাকে বলা হয় মহান পেশা। একজন শিক্ষক প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে শ্রদ্ধার ও ভক্তির পাত্র। শিক্ষা এবং শিক্ষক একে অন্যের পরিপূরক। যেকোনো শিক্ষা অর্জনে শিক্ষকের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

শিক্ষাগ্রহণ তখনই সফল হয়, যখন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর ভেতরে আন্তরিকতা গড়ে উঠে।

প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিকট তার শিক্ষক একটি আদর্শ। আদর্শের সেই শিক্ষকটি যদি হয় রাষ্ট্রের তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারী, তাহলে শিক্ষার্থীও তৃতীয় শ্রেণির সেই শিক্ষককে আর আদর্শরূপে গ্রহণ করতে চায় না। উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে শিক্ষকেরা সর্বোচ্চ মর্যাদা পান। আর আমাদের দেশের শিক্ষকেরা প্রতিষ্ঠানভেদে তৃতীয় এবং দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী।

দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে সর্বোচ্চ সনদ নেওয়া একজন শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে যখন প্রাথমিকের শিক্ষক হয়ে আসেন তখন রাষ্ট্রের ১৩তম গ্রেডের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়ে যান। একই ব্যক্তি একই শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ভিন্ন দপ্তরে গেলে ৯ম, ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তা হন।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করা অনেক শিক্ষকই ভিন্ন ভিন্ন পেশা বেছে নিয়ে চলে যাওয়ার মূল কারণই হচ্ছে এই গ্রেড বৈষম্য। শিক্ষকতা পেশাটি উচ্চশিক্ষিত একজন শিক্ষার্থীর নিকট আকর্ষণীয় নয়। ১৭ হাজার ৫৭০ টাকা সম্মানীতে ১৩ তম গ্রেডের প্রাথমিক শিক্ষকতা পেশাকে উচ্চশিক্ষিত মেধাবীদের নিকট আকর্ষণীয় করতে হলে সহকারী শিক্ষক নিয়োগবিধিতে ১৩ তম গ্রেডের পরিবর্তে ন্যূনতম ১০ম গ্রেড রেখে নিয়োগবিধি পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষা এবং শিক্ষকদের পেছনে রেখে নয় বরং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষা এবং শিক্ষকদের প্রাধান্য দিতে হবে।
অতএব সময় এসেছে শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় পেশা হিসেবে গড়ে তোলার। তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীরা যেন প্রথম পছন্দ হিসেবে শিক্ষকতা পেশাকে বেছে নেয় সে জন্য শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় করতে বর্তমান সরকারের দুজন তরুণ মন্ত্রী মহোদয়ের (শিক্ষামন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী)  সদয় দৃষ্টি এবং সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

জসীমউদ্দীন ইতি
সাংবাদিক, দৈনিক শিক্ষা ডঢকম