ঈদের ছুটিতে ব্যতিক্রমী বৃক্ষরোপণ

‘এভাবে প্রতিটি ইউনিয়নে গাছ লাগানো হলে আবহাওয়ার অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।’

এ বছর ঢাকায় ৪৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, বৈশ্বিক উষ্ণতা, ছয় ঋতুর মধ্যে তিন ঋতুর কোনো সুঘ্রাণ না পাওয়া, অসময়ে বৃষ্টি, গ্রামের মধ্যেও গরমকালে আগে যে পরিমাণ শীতল বাতাস ছিল, তা আর না পাওয়া ইত্যাদি বিষয় আমরা আজকাল বেশ লক্ষ করে যাচ্ছি।

সময়টা তখন গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান করি, এক সপ্তাহের মতো যে পরিমাণ তাপমাত্রা ছিল, তা একেবারে সহ্যের বাইরে। প্রকৃতপক্ষে গ্রামে জন্ম হওয়ার পর থেকে এত তাপ আর কোনো সময় অনুভব করিনি। তখন থেকে একটা বিষয় লক্ষ করলাম, এলাকায় বড় বড় যে গাছগুলো ছিল, তা কেটে ফেলা হয়েছে, বড় বড় জঙ্গল পরিষ্কার করা হয়েছে।

পরিকল্পনা করি যে জুন মাসে কোরবানি ঈদের ছুটি পাব। বাড়িতে গিয়ে বেশি করে গাছ লাগাব। সেই সুবাদে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এলাম। এ বিষয়ে ফেসবুকে মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলে আমার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বললাম। গাছ লাগানোর বিষয়টা নিয়ে অনেক আলোচনা করি, কীভাবে কী করব, কী গাছ লাগাব, কোথায় লাগাব।

সিদ্ধান্ত হলো ফলের গাছ লাগাব এবং গাছের সুরক্ষার জন্য মসজিদ প্রাঙ্গণে আমরা গাছ লাগাব। এ ক্ষেত্রে আর্থিক বিষয়টা খুব সুন্দর করে ব্যবস্থা করি। আমাদের হাইস্কুলের এসএসসি ২০১৫ থেকে ২০২২ ব্যাচ পর্যন্ত সবাইকে অবগত করে প্রতি ব্যাচ থেকে টাকা সংগ্রহ করে আমরা ২০০টি চারাগাছ ক্রয় করি। ঈদের পরদিন গাছ লাগাব বলে পরিকল্পনা করি।

এ সময় টানা কয়েক দিন বৃষ্টির জন্য আমরা একেবারে ঘর থেকে বের হতেই পারিনি। ঈদের পরদিন গাছ লাগাতে পারিনি। ৩ জুলাই দিনের অবস্থা কিছুটা ভালো দেখে সবাইকে অবগত করে গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিই। এদিন দুপুর ১২টায় শুরু করে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আমাদের ইউনিয়নের ২০টি মসজিদে ২০০টি চারাগাছ অটোরিকশায় করে মসজিদের প্রাঙ্গণে লাগিয়ে দিয়ে আসি।

আমি মনে করি, এভাবে প্রতিটি ইউনিয়নে ফলের গাছ লাগানো হলে আবহাওয়ার অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

আদিব হাসান
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়