নিরাপদ ট্রেনকে এমন অনিরাপদ বানাল কারা?

গাজীপুরের ভাওয়াল রেলস্টেশন এলাকায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন গত ডিসেম্বর মাসে দুর্ঘটনায় লাইনচ্যুত হয়েছিলফাইল ছবি প্রথম আলো

বাংলাদেশের জনগণের কাছে নিরাপদ ভ্রমণের জন্য পরিচিত পথ ছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই আত্মবিশ্বাস আমরা দিনদিন হারিয়ে ফেলছি। এমনকি রেললাইনে যাত্রা এখন অনিরাপদে পরিণত হয়েছে। নিরাপদ ট্রেনকে এমন অনিরাপদ বানাল কারা? 

ট্রেন ক্রসিংয়ের সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের খুবই সচেতন থাকতে হয়। এ ছাড়া যারা নিয়োজিত থাকে রাস্তা পারাপারের অনুমতি দেওয়া ও আটকানোর দায়িত্বে তাদেরও সচেতন থাকতে হয়। কিন্তু অনেক সময় নিজের চোখেও তাদের অসতর্ক থাকতে দেখা যায়।

বর্তমানে রেলওয়ে কর্মকর্তা তাদের দায়িত্ব বিষয়ে অনেক অমনোযোগী ও অসতর্ক হয়ে পড়েছে। একটা বছরে বারবার শুধু লাইনম্যানদের অসতর্ক থাকার ফলে দুর্ঘটনা ঘটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো না। তাদের এমন মনে হতে পারে যে, সারা দিন তো ট্রেন চলছেই বা প্রতিদিন তো চলছেই তো চলুক না!

আসলে, অলসতা আসার মতোই দায়িত্বটা কিন্তু তাদের বোঝা উচিত তাদের এক সেকেন্ড অসতর্কতা কিংবা অলসতা  হতে পারে একজন মানুষের জীবন হারানোর কারণ। যা কি না হতে পারে একজন মা, বাবা, সন্তান কিংবা স্ত্রীর আজীবন কান্নার কারণ।

গত শুক্রবারও গাজীপুর দুটো ট্রেনের মর্মান্তিক সংঘর্ষ ঘটেছে। কয়েক মাস আগেও ঘটেছিল মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনা। কয়েক মাস আগের দুর্ঘটনাতে দোষারোপ করা হয়েছিল কর্মচারীদের অসতর্কতাকে। গত শুক্রবারের ঘটনাতেও একই কারণ বলা হচ্ছে। হয়তো বা ভবিষ্যতেও তা বলা হবে। তাহলে এর শেষ কোথায়?

আদৌ কি শেষ হবে এই অবহেলাজনিত দুর্ঘটনা।  আমরা কি আবারও বলতে পারব, যে নিরাপদ ভ্রমণের অপর নাম বাংলাদেশ রেলওয়ে। আমরা চাই আমাদের দেশের সব রেলওয়ে স্টেশনে দায়িত্বশীল লোকদের নিয়োগ দেওয়া হোক। তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক। সম্মানজনক বেতন-ভাতা দেওয়া হোক।

  • আব্দুল ওহাব
    শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়