শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম এখন যেন শুধু শিক্ষার্থীদের পাঠদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। শারীরিক ও মানসিক বিকাশ তথা সৃজনশীল কার্যক্রমের কোনো সুযোগ এখানে প্রায় নেই বললেই চলে। তার অন্যতম একটি কারণ দেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নেই নিজস্ব কোনো খেলার মাঠ। বিশেষ করে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠের অভাব চোখে পড়ার মতো।
একটা সময় ছিল যখন মাঠ বা স্কুল-কলেজের খেলার চত্বর মুখর থাকত। এখন তেমনটি খুব একটা চোখে পড়ে না। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে পুরোনো কিছু স্কুল-কলেজ ছাড়া নতুন অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
একটু বেশি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, গ্রামাঞ্চলে যেমনটা স্কুল-কলেজ কিংবা মাদ্রাসায় রয়েছে ঠিক তেমনি খেলার মাঠও রয়েছে। তবে এসব মাঠ এখন বিভিন্ন সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় এমনকি বিভিন্ন রাজনৈতিক জনসভার অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়।
বাণিজ্যিক কাজে এবং ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যেও মাঠগুলো নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে যে লোভের সংস্কৃতির জন্ম হয়েছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এতে করে শিক্ষার্থীদের খেলার সুযোগ হারাচ্ছে।
পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা অন্যের বাসা বাড়ি ভাড়া নিয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করে দেন। ফলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মাঠের অভাবে যথাযথ শারীরিক কসরত কিংবা খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে এদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তুলনামূলকভাবে। এতে করে শিক্ষার্থীরা যেন এক বন্ধী জীবন পার করছে।
সংশ্লিষ্ট মহলকে অবশ্যই এই বিষয়ে ভাবতে হবে। মাথায় রাখতে হবে যে, দেশের সব খেলার মাঠ যেন সরকারি বা বেসরকারি প্রয়োজনে ব্যবহার না করা হয়। পাশাপাশি শিশুদের খেলাধুলার প্রতি উৎসাহ প্রদানস্বরূপ নানা ধরনের শরীরচর্চার কার্যক্রম হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের দিকে নজর দিতে হবে। ফলে শিশুরা বেড়ে উঠবে মুক্তভাবে, আনন্দ আর উদ্দীপনায় উদ্দীপ্ত হয়ে।
তৌহিদ-উল বারী
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম