একের পর এক আগুনের ঘটনা, জলাশয় রক্ষা করুন

রাজধানী ঢাকায় প্রতি বছর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। ২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলিতে ১২৪ জন এবং ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চুড়িহাট্টায় ৭১ জন ও বনানীতে ২৭ জন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারায়। সম্প্রতি রাজধানীর বেইলি রোডের একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্বের সকল দেশেই কমবেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। একটু সচেতন হলে বাংলাদেশে এসব অগ্নিকাণ্ডে আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে পারি। ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরের আগুন সহজে নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকল বাহিনীর পর্যাপ্ত ফাঁকা উন্মুক্ত রাস্তা, খেলার মাঠ, পুকুর, জলাশয় খুবই দরকার।

বঙ্গবাজারের আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলেন পুকুরের পানি দিয়ে অগ্নিনির্বাপণ করে। যা আমাদের শিক্ষা দেয় যে পুকুর জলাশয়ের গুরুত্ব কত। এ ছাড়াও পরিবেশের ভারসাম্য তথা বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় জলাশয় ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।

উন্মুক্ত ফাঁকা রাস্তায় দমকল বাহিনীর গাড়িবহর দ্রুত প্রবেশে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারে। উন্মুক্ত ফাঁকা রাস্তায় গাছ লাগিয়ে অক্সিজেনের সরবরাহ বৃদ্ধি করা যায়। খোলা মাঠ উদ্যানে গাছ লাগিয়ে, লেক খনন করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করাসহ চিত্ত বিনোদনের পার্ক তৈরি হয়। যেখানে শিশুরা হেসে খেলে বেড়াবে তাদের মেধার বিকাশ ঘটবে।

কিন্তু বাস্তবে ঢাকার চিত্র ঠিক উল্টো। খাল জলাশয় ভরাট ও মাঠ দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ। অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ বিপর্যয় যেমন ঘটছে তেমনি অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

অতএব ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের কাছে আমার আকুল আবেদন এই যে, তারা যেন এই বিষয়টি আমলে নেয় ঢাকা শহরে প্রশস্ত রাস্তা, পর্যাপ্ত পুকুর, জলাশয়, মাঠ, উদ্যান নির্মাণ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা হোক। অগ্নিকাণ্ডের মতো বিপর্যয়কে মুক্তি দেওয়া হোক।
     
ফজলে রাব্বি
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
সরকারি তিতুমীর কলেজ