অস্থির বাজারে মধ্যবিত্তের টিকে থাকা...

বাজারে ডিম, মাছসহ প্রায় সব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছেফাইল ছবি : প্রথম আলো

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের অস্বাভাবিক অস্থিরতা এখন সাধারণ মানুষের জীবনে বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মধ্যবিত্ত তো বটেই, দিনমজুর থেকে শুরু করে সৎ চাকরিজীবী পর্যন্ত সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রশ্ন উঠছে—কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে? সরকার কি যথাযথভাবে মজুত ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছে না?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে সিন্ডিকেট ও গুদামজাত করার প্রবণতাই মূলত এ অস্থিরতার কারণ। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগ নিলেও প্রভাবশালী গোষ্ঠীর দৌরাত্ম্যে সেগুলো কার্যকর হচ্ছে না। ফলে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, ভোজ্যতেলসহ নানা পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিপুল মুনাফা লুটছেন কিছু ব্যবসায়ী। এ ব্যবস্থার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক ও ভোক্তা—কৃষক ন্যায্যমূল্য পান না আর ক্রেতাকে দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে।

সবশেষে বলা যায়, বাজার অস্থিরতা শুধু অর্থনৈতিক সংকট নয়, এটি সামাজিক বৈষম্যও বাড়াচ্ছে। সীমিত আয়ের মানুষদের কাছে প্রতিদিনের বাজার এখন দুশ্চিন্তার নতুন খাতা। তাই লুটপাট ও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ আজ সময়ের দাবি। সরকার, ভোক্তা ও নাগরিক সমাজ—সব পক্ষকেই এ বিষয়ে সচেতন ও সোচ্চার হতে হবে।

সবচেয়ে ভুক্তভোগী হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবার। যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করলেও বাজারে তা কার্যকর হচ্ছে না। কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এর ভুক্তভোগী। হোস্টেল বা মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচের পাশাপাশি অতিরিক্ত বাজারদর সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বিগত জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হলেও আবারও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। মৌসুমি দমনমূলক পদক্ষেপে সাময়িক স্বস্তি মিললেও টেকসই সমাধান হচ্ছে না। কাঁচামাল, ডিম, মাছসহ প্রায় সব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।

সমাধান কী?

প্রথমত, সরকারের বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে হবে। দ্বিতীয়ত, কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তৃতীয়ত, সিন্ডিকেট ভাঙতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও কঠোর আইন প্রয়োগ জরুরি।

সবশেষে বলা যায়, বাজার অস্থিরতা শুধু অর্থনৈতিক সংকট নয়, এটি সামাজিক বৈষম্যও বাড়াচ্ছে। সীমিত আয়ের মানুষদের কাছে প্রতিদিনের বাজার এখন দুশ্চিন্তার নতুন খাতা। তাই লুটপাট ও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ আজ সময়ের দাবি। সরকার, ভোক্তা ও নাগরিক সমাজ—সব পক্ষকেই এ বিষয়ে সচেতন ও সোচ্চার হতে হবে।

  • মো. মুবাশ্বির হোসেন
    গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
    জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।