যাবিপ্রবি: শুধু বহিষ্কার নয়, এই অপরাধের জন্য আইনি শাস্তি চাই

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন। যশোর জেনারেল হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

বুয়েটে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের কথা আমরা আরেকবার মনে করতে যাচ্ছিলাম। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যাবিপ্রবি) নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড টেকনোলজি (এনএফটি) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ইসমাইল হোসেনকে হলের মধ্যে আটকে রেখে চার ঘণ্টা নির্যাতন করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। শহীদ মসিউর রহমান হলের ৫২৮ নম্বর কক্ষে এই অনাবাসিক ছাত্রকে মারধর করা হয়। কক্ষে প্রবেশের পর ইসমাইল হোসেনকে বেলা দুইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা বেল্ট, জিআই পাইপ ও স্টাম্প দিয়ে মারধর করা হয়।

আরও পড়ুন

বর্তমানে ইসমাইলকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা চাই এ ধরনের অমানবিক নৃশংস নির্যাতনকারী ও জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে আর কেউ এ ধরনের অপরাধ করতে সাহস না পায়। স্থায়ী বহিষ্কারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে কেউ দ্বিতীয়বার এমন কাজ করতে দ্বিধা বোধ করে।

যাবিপ্রবিতে ভয়াবহ র‌্যাগিং সংস্কৃতির বিষয়টি নিয়ে জানাজানি থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। জানুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হোস্টেলে কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষার্থীর হয়রানির চাপ সহ্য করতে না পেরে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের চার শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। কথা হচ্ছে, কেউ আহত বা অসুস্থ হয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষের উচিত তাঁদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা হয় না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোরও মাথা ঘামায়নি হল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি ক্যাম্পাসের বাইরে প্রকাশ না করার জন্য ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের হুমকি দেন সিনিয়র শিক্ষার্থীরা।

আমরা কখনোই জানি না যে আমরা প্রতিকূল পরিবেশ সহ্য করতে পারব না। এই ক্ষয় রোধে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ জরুরি। যেকোনো শিক্ষার্থী এ ধরনের অপরাধ করলে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনা উচিত।

সৈয়দ আশিকুজ্জামান আশিক
গবেষণা সহকারী, বায়োইনফরমেটিক্স রিসার্চ ল্যাব, সেন্টার ফর রিসার্চ ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিআরআইডি), ঢাকা।