মেধাবীরা কি এ জন্যই এ দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমান

আমি রূপালী ব্যাংকের একজন সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। কিন্তু আজ প্রায় ৯ মাস হতে চলল নিয়োগ প্রদানের কোনো খবর নেই। চাকরি পাওয়ার পর একটা প্রাইভেট জব ছেড়ে দিই। ভেবেছিলাম, আমার তো একটা চাকরি হয়েছে। অন্য কেউ আমার জায়গায় সুযোগ পাক। কিন্তু কে জানত, সেটা এত বড় ভুল সিদ্ধান্ত হবে? আমার মতো অনেকেই সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পর অন্য চাকরিতে প্রবেশ করেননি বা ছেড়ে দিয়েছেন। অনেকে সম গ্রেড বা নিচের গ্রেডের চাকরিতে ভাইবা দেননি। তাঁরা সবাই এখন ভুক্তভোগী।

বিসিএসের মতো পরীক্ষার দীর্ঘসূত্রতার জন্য অনেকে দ্রুত চাকরি পাওয়ার আশায় ব্যাংক বেছে নেন। কিন্তু নিয়োগের এমন দীর্ঘসূত্রতা সব বেকারদের জন্যই মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। এদিকে রূপালী ব্যাংকের এই দীর্ঘসূত্রতার জন্য প্যানেল–প্রত্যাশী অনেক চাকরিপ্রার্থীও বেকারত্বের দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন।

আমরা যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, সেটা কি এই বাংলাদেশ? এই দেশে একটা চাকরি পাওয়াই যেখানে দুষ্কর, সেখানে চাকরি পেয়েও যদি এভাবে মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়, তাহলে কোন আশায় আমাদের তরুণ প্রজন্ম এ দেশ নিয়ে ভাববে? মেধাবীরা কি এ জন্যই এ দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমান?

আমাদের ব্যাচসহ আরও ৪টি ব্যাচের প্রায় ৯০০ জন সুপারিশপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীর কেউ ৯ মাস, কেউ ৮ মাস আবার কেউ ৬ মাস যাবৎ এই মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। আমি আশা করছি, এই লেখার মাধ্যমে আমাদের মানসিক যন্ত্রণার কথা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছবে এবং মানবিক দিক বিবেচনা করে হলেও রূপালী ব্যাংকসহ সব প্রতিষ্ঠান তাদের স্ব স্ব নিয়োগ দ্রুত প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এক অসহায় চাকরিপ্রার্থী
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক