এই অভিশাপ থেকে চট্টগ্রামকে মুক্ত করবে কে?

চট্টগ্রাম শহরের প্রধানতম সমস্যা জলাবদ্ধতা। এই জলাবদ্ধতা বর্ষাকালে জীবনমরণ সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে শহরের অনেক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। মানুষের চলাচল থমকে গেছে। বছরের পর বছর জলাবদ্ধতার এই সমস্যা থাকলেও এ থেকে মুক্তি মিলছে না। একটু বৃষ্টি হলে তলিয়ে যায় চট্টগ্রাম শহরের অনেক জায়গা, জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় প্রায় নগরজুড়ে।

একসময় ‘চাকতাই খাল চট্টগ্রামের দুঃখ’ শিরোনামে রিপোর্ট প্রকাশিত হতো প্রায় সব দৈনিকে। দুঃখ এখন আর চাকতাইকেন্দ্রিক নেই। চট্টগ্রাম শহরের বিশাল বিশাল জলাধার ভরাট করে আবাসিক এলাকা করা হয়েছে। ডজন ডজন পাহাড় কেটে সড়ক বানানো হয়েছে। শহরে নালার ওপর অপরিকল্পিত মার্কেট তৈরি করা হয়েছে। এসবের কারণে নালা–নর্দমার পানি অপসারণ হতে পারে না। টেলিভিশনের খবরে দেখলাম একটি হাসপাতালের অভ্যন্তরে পানি ঢুকেছে হাঁটু পরিমাণ। মানুষ চিকিৎসা নেবে কীভাবে! মানুষ নিজেই নর্দমার পানির সংস্পর্শে এসে সেখানে অসুস্থ হচ্ছে। এই দৃশ্য চোখে না দেখলে বোঝানো কঠিন।

অথচ কী অসাধারণ একটি শহর চট্টগ্রাম! বলা হতো প্রাচ্যের রানি। পাহাড়, সমতল, নদী, সমুদ্র মিলে একাকার। পৃথিবীতে এমন কম্বিনেশনের শহর মনে হয় আর একটি কী দুটি আছে। অথচ চট্টগ্রামের সঙ্গে জলাবদ্ধতার সম্পর্ক এমন হয়েছে যে বর্ষা এলেই মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। পানি কবে নামবে, সে প্রহর গুনতে হয় তাদের।

একদিকে জোয়ারের পানি, আরেকদিকে বৃষ্টির পানি—দুটি মিলে নগরজীবনের নাভিশ্বাস। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ প্যানেল করে তাদের পরামর্শ নিয়ে একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে উপযুক্ত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সিটি করপোরেশন, সিডিএসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ কাজে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

শরীফ হাসান
হালিশহর, চট্টগ্রাম।