পরিযায়ী পাখি শিকার বন্ধ করতে হবে

পরিযায়ী পাখিছবি: সংগৃহীত

শীত মৌসুমে বাংলাদেশের নদ-নদী, হাওর-বাঁওড়, জলাভূমি, সমুদ্র উপকূল ও চরাঞ্চলে নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে। হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে সুদূর সাইবেরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ড ও তিব্বত অঞ্চল থেকে এসব পরিযায়ী পাখি নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে আমাদের দেশে আসে। কুনচুষী, রামঘুঘু, দুর্গা, শাবাজসহ নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখির কলকাকলিতে তখন প্রকৃতি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত।

একসময় বাংলাদেশে দুই শতাধিক প্রজাতির পরিযায়ী পাখির দেখা মিলত; কিন্তু অবাধ ও নির্বিচার শিকারের ফলে বর্তমানে হাতে গোনা কয়েকটি প্রজাতির পাখিই চোখে পড়ে। ১৯৭৪ সালের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের ২৬ ধারায় পরিযায়ী পাখি শিকারকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও এর কার্যকর বাস্তবায়ন প্রায় নেই বললেই চলে।

বাংলাদেশের সুন্দরবন, কুয়াকাটা, হাকালুকি হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় পরিযায়ী পাখির বিচরণ তুলনামূলকভাবে বেশি। এসব এলাকায় প্রশাসনিক নজরদারি ও তদারকি জোরদার করা এখন সময়ের দাবি। যারা প্রতিবছর এ ধরনের অপকর্মে জড়িত থাকে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

একই সঙ্গে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিযায়ী পাখি সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পরিবেশকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সমন্বিত উদ্যোগও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি—যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পরিযায়ী পাখি শিকার বন্ধ করে আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসুন।

লোটাস জাহাঙ্গীর

শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়