অনলাইন প্রতারণা

এখন হচ্ছে প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তির সদ্ব্যবহারে জনজীবন বর্তমানে অনেকটাই সহজ ও সাশ্রয়ী হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তির সহায়তায় আমরা খুব সহজেই জটিল কাজগুলো নিমেষেই সমাধান করতে পারছি। যেমন, শপিং করতে হলে আমাদের প্রথমত শপিং মলে যেতে হবে, শপিং মলে যাওয়ার সময় পড়তে পারে দীর্ঘ যানজট, যা অনেক সময় বিরক্তিকর একটি ব্যাপার। শপিং মলে পৌঁছে দোকানে দোকানে ঘুরে কাপড়চোপড় পছন্দের একটি ব্যাপার তো থাকছেই, যা অনেক সময়ের ব্যাপার। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নত ব্যবহারের ফলে এখন গড়ে উঠেছে অনলাইন শপিং। নেই কোনো যানজটের ভোগান্তি, নেই মূল্যবান সময়ের অপচয়। ইন্টারনেট ও ফেসবুকের সহায়তায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কাপড় পছন্দ করে নিমেষেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করে সহজে প্রয়োজন মেটানো হচ্ছে। সময়ের ব্যবধানে এর ব্যবহার এখন উচ্চস্তরে পৌঁছে গেছে। যার ফলে দেশের বড় বড় বিক্রয় প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যন্ত এখন অনলাইনে তাদের কার্যক্রম চালু করেছে।

শুধু যে বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তা কিন্তু নয়, বরং ছাত্রছাত্রীরা নিজের ভরণপোষণ নিজে বহন করার জন্য গড়ে তুলছে অনলাইন ব্যবসা। বিভিন্ন ধরনের পণ্য অবাধে কেনাবেচার কার্যক্রম চালিয়ে নিজে এবং অন্যদের লাভবান করে নিচ্ছে একমাত্র প্রযুক্তির সদ্ব্যবহারে। তাদের বেশির ভাগেরই নেই কোনো নিজস্ব প্রতিষ্ঠান বা দোকান। নেই মাসে মাসে দোকান ভাড়ার ভোগান্তিসহ নানা রকম জটিলতা। প্রযুক্তির এমন সদ্ব্যবহারের মধ্যে গড়ে উঠছে প্রতারণার ফাঁদও। এর মধ্যে ঢুকে পড়েছে অসৎ লোক ও অসাধু ব্যবসায়ী। তাদের মায়াজালে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতা

অনলাইন ব্যবসার নামে বিভিন্ন রকম প্রতারণার চক্রে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই। অনলাইন জগতে নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললেও অনেক সময় বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। কখনো ক্রেতা টাকা পরিশোধের পর পাচ্ছে ভুয়া পণ্য। কখনো কখনো বিক্রেতা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অগ্রিম অল্প টাকা পরিশোধিত করে পাচ্ছে পণ্য ডেলিভারি। কুরিয়ার ডেলিভারির সময় বিভিন্ন রকম মারধরের মাধ্যমে পণ্য ও টাকা উভয়ই আত্মসাৎ করে নিচ্ছে। মারধর বা হেনস্থা তো আছেই। এমন ঘটনা কিন্তু ঘটছে।

পরিশেষে বলতে চাই, অনলাইনে প্রতারণার শিকার রোধ করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। তা না হলে সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতা অনলাইন কেনাবেচায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। সরকারের সাইবার সিকিউরিটিকে আরও বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। অনলাইন বেচাকেনা করতে হলে রেজিস্টার্ড অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং প্রতারণার অভিযোগ উঠলে সেটিকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এতে দেশের ই-কমার্সের পরিসর আরও বাড়বে ও শক্তিশালী হবে। কেউ যাতে অনলাইন প্রতারণার শিকার না হয় এমন প্রত্যাশা রাখছি সরকারের কাছে।

সাজ্জাদ হোসেন রায়হান
শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ
ঢাকা কলেজ