আয়কর মেলা

পত্রিকান্তরে প্রকাশ, এ বছর আয়কর মেলা (২০২০-২১ সালের জন্য) অনুষ্ঠিত হবে না, সিদ্ধান্তটি কতটুকু যুক্তিযুক্ত, তা ভাবার দাবি রাখে। উল্লেখ্য, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি সরকারের প্রচেষ্টা ও গণসচেতনতার কারণে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে, যার ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তথা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবিরতা থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আশা করা যায়, অচিরেই আরও উন্নত হবে। সুতরাং কর মেলা আয়োজনে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

বিগত বছরগুলোতে লক্ষণীয় ছিল, কর মেলায় সম্মানিত করদাতারা স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে আয়কর রিটার্নসহ কর প্রদান করে আসছেন। এই স্বতঃস্ফূর্ততার কারণ ছিল আয়োজন এনবিআরের সর্বস্তরে দূরদর্শী প্রশংসনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেসব ব্যবস্থা আলাদাভাবে কর সার্কেলগুলোর পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এর জন্য যে পরিমাণ স্থান সংরক্ষণ, বসার ব্যবস্থা, পরামর্শ সেবা, লোকবল, ব্যাংকের শাখা, সামাজিক সুরক্ষা বজায় রাখা। রিটার্ন গ্রহণকারী কর্মকর্তা ও সহযোগীদের কাছ থেকে পূর্ববর্তী বছরগুলোর মতো দক্ষতার সঙ্গে সেবা প্রদান করা তাদের সদিচ্ছা ও প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও সম্ভব হবে না।

স্মরণ করা প্রয়োজন, সম্মানিত করদাতারা সবাই সুশিক্ষিত এবং তাঁরা সবাই সচেতন ও চলমান পরিস্থিতিতে সজ্ঞান। তাঁরা সরকারের কাছ থেকে কর মেলায় প্রশংসনীয় সহযোগিতা পান বলেই অতি অল্প কয়েক দিনের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেলায় আসার কারণে রেকর্ডসংখ্যক রিটার্ন ও কর পাওয়া দেশের জন্য সম্ভব হয়। করদাতারা আশা করেন, ‘মুজিব বর্ষে’ এর ব্যতিক্রম হবে না। কারণ, কর দেওয়ায় বাহাদুরিও আছে।

মিন্টো রোডের অফিসার্স ক্লাব মেলার কার্যক্রমের জন্য একটি আদর্শ জায়গা, সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধা বিদ্যমান। মেলা আয়োজনে এই ক্লাবে কোনো অসুবিধা নেই। শুধু এনবিআরের সদিচ্ছা থাকা প্রয়োজন সাফল্যজনকভাবে বিগত বছরগুলোর মতো পদক্ষেপ নেওয়া। (এমন পদক্ষেপ না নিলে) নতুন করদাতা, টিআইএন, ইত্যাদির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে না বরং ২০২০-২১ সালের কর রিটার্ন জমা কমে যাবে। ফলে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে না, যা হবে আত্মঘাতী। মেলা আয়োজনের সময় শুধু কিছু অতিরিক্ত ব্যবস্থা করতে হবে, যা হচ্ছে মেলায় ঢোকার সময় ক্লাব গেটের সামনে স্যানিটাইজার, মাস্ক এবং প্রয়োজনীয় সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং রিটার্ন গ্রহণকারী কর্মকর্তা ও সহযোগীরা স্বল্প সময়ের মধ্যে সমাগম হালকা করার জন্য রিটার্নদাতাদের বিদায় করতে পারেন।

মেলা আয়োজনের আগেই পত্রিকার মাধ্যমে সুরক্ষাসম্পর্কিত কিছু দিকনির্দেশনা দিলে কর মেলা আয়োজনে কোনো অসুবিধা হবে না। ‘মুজিব বর্ষে’ আশা করি এনবিআর সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা করে রেকর্ডসংখ্যক দরদাতা ও টিআইএন ইস্যু করতে পারবেন এবং দেশের প্রত্যাশিত ‘জিডিপি’ অর্জনে সক্ষম হবেন।

অতএব, মাননীয় অর্থমন্ত্রী ও এনবিআরের চেয়ারম্যানের কাছে অনুরোধ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টা ও অক্লান্ত পরিশ্রম সফল করবেন।

নয়াপুরবাজার, নারায়ণগঞ্জ