মৃত্যুদণ্ডের বিধানে কি ধর্ষণ বন্ধ হবে?

সম্প্রতি সিলেট ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ধর্ষণসহ কয়েকটি ধর্ষণ, গণধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকার শাহবাগসহ বিভিন্ন জেলায় ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে ওঠে। ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি অঙ্কন থেকে শুরু করে সামাজিক আন্দোলনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেন। শাহবাগসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন চলছে ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ সভা। পক্ষান্তরে ধর্ষণ কিন্তু থেমে নেই। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৈশাচিক ও বর্বরোচিত এমন ঘটনা ঘটছে।

এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে আইন তৈরি করার আদেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর আইনমন্ত্রী বলেছেন, এটা আইনে পরিণত হবে। ১৩ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। তবে আমার মত হচ্ছে, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না। মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু করলেই কি ধর্ষণ বন্ধ হবে?

আমাদের দেশে ধর্ষণের ঘটনা দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। সম্প্রতি গণধর্ষণ ও শিশু ধর্ষণের মাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এ বছর, অর্থাৎ ২০২০ সালের ৯ মাসে ধর্ষণের শিকার ৯৭৫ জন এবং ২০১৯ সালে ৫ হাজার জন। চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কেউই রক্ষা পাচ্ছে না এ বর্বর ও জঘন্য কাজ থেকে। ধর্ষণ ও গণধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। এটা বন্ধ করতে হলে বর্তমান সরকারের সদিচ্ছা থাকা যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা। পারিবারিক শিক্ষাটিও জরুরি। সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে কার্যকরভাবে গণতান্ত্রিক করতে পারলে ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা গেলে ধর্ষণের সংস্কৃতি বন্ধ করা সম্ভব।

মো. ইয়ামিন খান, ফরিদপুর