ক্রিকেট-পাগল

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

ব্যাট হাতে আমার তখন রীতিমতো কাঁপাকাঁপি অবস্থা। শেষ ওভারের ৪ বলে জেতার জন্য দরকার ৪ রান । অথচ দুই বল আমি ইতিমধ্যে শেষ করে ফেেলছি। আর ২ বলে ৪ রান দরকার। আমাদের দলের ক্যাপ্টেন শফিক ভাই তখন আমায় পেলে কাঁচা চিবিয়ে খেয়ে ফেলেন এমন অবস্থা। ইতিমধ্যে আমার চৌদ্দপুরুষ উদ্ধার করে চলেছেন তিনি। সবাই আমাকে ‘সিঙ্গেল’ নিয়ে অন্য প্রান্তে থাকা তুহিন ভাইকে স্ট্রাইক দিতে বলছে। আমি সেসবে কান দিলাম না। সামনে এসে দিলাম ব্যাটটা হাঁকিয়ে। কিন্তু বলটা কোন দিকে বেরিয়ে গেল বুঝলাম না। মানে, আবার ডট বল। এদিকে টেনশনে শফিক ভাইয়ের তখন অজ্ঞান অবস্থা। আমি পড়েছি মহাবিপদে। শেষ বলে বাউন্ডারি না হলেই নয়। মনে মনে দোয়া পড়তে লাগলাম। কারণ ম্যাচ জেতার চেয়েও আত্মরক্ষাটাই আমার কাছে প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওভারের শেষ বল। যা থাকে কপালে ভেবে হাঁটু গেড়ে বসে দিলাম ব্যাট চালিয়ে। খানিক সব ঝাপসা। কী হয়েছে বুঝতে পারছি না। আমার বুঝে ওঠার আগেই শফিক ভাই এসে জড়িয়ে ধরলেন আমাকে। আনন্দে তাঁর অবস্থা হয়েছিল দেখার মতো। আমি শুধু এতটুকু বুঝতে পারলাম, এই ক্রিকেট-পাগল বাঙালিরা সত্যিই খুব অদ্ভুত। তাদের মন বোঝা বড় দায়। সেটা বোঝার চেষ্টায় আর গেলাম না। শফিক ভাইকে আরেক হাতে জড়িয়ে ধরলাম। আড়চোখে দেখতে পেলাম আমার দলের অনেকের চোখে খুশির অশ্রু।
ইমরান হাসান
সবুজবাগ, চট্টগ্রাম।