রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন নিয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেতে ইচ্ছুক অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে।
তবে মনোনয়নের দৌড়ে আছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নিখিল কুমার চাকমা ও জেলা পরিষদের সদস্য কাউখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অংসুই প্রু চৌধুরী।
১৯৯৮ সালের পর থেকে তিন পার্বত্য (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) জেলা পরিষদে দলীয় মনোনয়নের ভিত্তিতে একজন আদিবাসী চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য নিয়ে অন্তর্বর্তী পরিষদ পরিচালিত হয়ে আসছে। তবে গত ২০ নভেম্বর জাতীয় সংসদে পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন (সংশোধনী) পাস করা হয়। সংশোধনী আইনে প্রতিটি পরিষদে একজন আদিবাসী চেয়ারম্যান ও ১৪ জন সদস্য মনোনয়নের মাধ্যমে পরিষদ কার্যক্রম পরিচালনার বিধান করা হয়। ওই সময় থেকে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য অংসুই প্রু চৌধুরীকে চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন দিতে ইচ্ছুক। কিন্তু বেশ কিছু জ্যেষ্ঠ নেতাসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশ দীপংকর তালুকদারের সিদ্ধান্তের বিরোধী।
তাঁদের মতে, বর্তমান চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমাকে চেয়ারম্যান পদে বহাল রাখা হলে গত পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে ভালোভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। বর্তমান কোনো সদস্যকে বা নতুন কাউকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেওয়া হলে দলীয় কোন্দল বাড়বে এবং পরিষদ পরিচালনায়ও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নিখিল কুমার চাকমা বলেন, ‘আসলে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তিনিই হবেন চেয়ারম্যান। সেই প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। আমাকে যদি দায়িত্বে বহাল রাখা হয় তা আমি আন্তরিকভাবে পালন করব। অতীতেও আমি সেভাবে দায়িত্ব পালন করে এসেছি।’
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য অংসুই প্রু চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত নই। কে চেয়ারম্যান হবেন বা কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তা জেলা আওয়ামী লীগের বিষয়।’
এ বিষয়ে কথা বলতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কথা বলা যায়নি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা মাতব্বর বিষয়টির কিছুতা সত্যতা রয়েছে বলে জানান। তবে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে মুঠোফোন কেটে দেন। এরপর বারবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।