খালেদা জিয়ার জানাজা আগামীকাল মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে, দাফন জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে

পুরান ঢাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে অবস্থিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত প্রাঙ্গণে খালেদা জিয়া। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ছবি: দীপু মালাকার

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা আগামীকাল বুধবার বাদ জোহর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা ও এর সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিত হবে। তাঁকে তাঁর স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পাশে দাফন করা হবে।

আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে  রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে অংশ নেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে তিনি খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফনের বিষয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের শুরুতেই তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন মোনাজাত পরিচালনা করেন।

বৈঠকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল বুধবার থেকে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ও আগামীকাল একদিনের সাধারণ ছুটির সিদ্ধান্ত হয়।

আরও পড়ুন

রাষ্ট্রীয় শোকের অংশ হিসেবে তিন দিন দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। একই সঙ্গে আগামীকাল বুধবার দেশের প্রতিটি মসজিদে খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হবে। অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়গুলোতেও আয়োজন হবে বিশেষ প্রার্থনার।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোক বই খোলা হবে।

বৈঠকে  খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে একটি শোকপ্রস্তাব গৃহীত হয়। এটি  পাঠ করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

আরও পড়ুন

বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে অংশ নেওয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী  খালেদা জিয়ার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং  খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাসহ সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান।  

বৈঠকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী  খালেদা জিয়ার দাফন ও জানাজা সম্পর্কিত বিষয়ে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে গভীর শোকের সময় আমরা সবাই সমবেত হয়েছি। পুরো জাতি  খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করছিল, যাতে তিনি আমাদের সঙ্গে আরও অনেক বছর থাকেন। আমরা তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। জাতির পক্ষ থেকে আমরা তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। তাঁর দাফন ও জানাজার বিষয়ে যা যা কিছু প্রয়োজন সব ধরনের সহায়তা সরকার করবে।’

আরও পড়ুন

স্মৃতিচারণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সর্বশেষ ওনার সঙ্গে দেখা হয়েছিল গত ২১শে নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে। সেদিন তিনি খুব উৎফুল্ল ছিলেন। আমার সঙ্গে অনেকক্ষণ গল্প করেছেন। আমার, আমার স্ত্রীর স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন। তিনি নিজে অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু সবার সুস্থতা নিয়ে তাঁর উদ্বেগ ছিল। জাতির এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, যখন আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে, এ সময় তাঁর উপস্থিতি আমাদের ভীষণ প্রয়োজন ছিল। তাঁর চলে যাওয়া জাতির বিরাট ক্ষতি।’

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন