প্রথম আলো: আপনি আগে রাজনীতি করেননি। কিন্তু দেশের সবচেয়ে বড় এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এর পেছনের কারণ কী?
জায়েদা খাতুন: আমি রাজনীতি করি নাই, এটা ঠিক না। আমি ঘরে থেকে আমার ছেলেকে সহযোগিতা করেছি। আমার ছেলে এখানে মেয়র ছিল, তার আগে উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ছিল। আমার ছেলে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছে। তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছি। আমি হচ্ছি মা আর সে হচ্ছে আমার সন্তান। আমি চেয়েছিলাম, সন্তান মানুষের সেবা করুক। সেভাবেই তাকে গড়ে তোলা হয়েছে।
প্রথম আলো: জাহাঙ্গীর আলমের মা হিসেবে মানুষের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা ছিল আপনার প্রচারণায়। ভোটারদের সহানুভূতিই কি আপনার ভরসা?
জায়েদা খাতুন: আমার ছেলে এখানে মেয়র ছিল। তিন বছর মেয়রের দায়িত্বে পালন করার পর হঠাৎ করে ঢাকা থেকে একটি চিঠি দিয়ে তার মেয়র পদটা স্থগিত করে দিল। গাজীপুরের মানুষ তাকে লাখ লাখ ভোট দিয়েছে। ঢাকা থেকে চিঠি দিয়েই যদি মেয়র পদ বাতিল করে দেওয়া যায়, তাহলে গাজীপুরের মানুষের ভোটের দামটা কোথায় রইল।
প্রথম আলো: আপনি এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী। বিএনপির কোনো মেয়র প্রার্থী নেই। আপনার দিকে কোন পক্ষের ভোট পড়বে বলে আশা করেন।
জায়েদা খাতুন: রাজনীতি হচ্ছে কর্ম এবং মানুষকে সহযোগিতা করার মধ্যে। আমার সন্তান এখানে কাজ করেছে। আমার এবং আমার সন্তানের জন্য ভালোবাসার জায়গা তৈরি হয়েছে। দল দলের মতোই থাকবে।
প্রথম আলো: ভোট গ্রহণ হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। অনেকেরই এটি নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে। আপনি কি মনে করেন ভোট সুষ্ঠু ও অবাধ হবে?
জায়েদা খাতুন: ইভিএমে ভোট করার মতো আমাদের নাগরিকেরা সচেতন নন। এটা বুঝতে সময় লাগে। ইভিএমের প্রতি মানুষের একটা নেতিবাচক ধারণা আছে। মানুষের মধ্যে এটা নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন আছে। গাজীপুরে দেখব এটা কি স্বচ্ছ ভোট করে নাকি ভেজাল করে। এই ভোটের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে ইভিএম সঠিক নাকি খারাপ।
প্রথম আলো: নির্বাচনের ফলাফল যা–ই হোক মেনে নেবেন কি না?
জায়েদা খাতুন: জনগণ ও ভোটাররা যে রায় দেবেন, সেটা শতভাগ মেনে নেব। কিন্তু ফলাফল যদি পাল্টানো হয়, তাহলে গাজীপুরের মানুষ বা সারা দেশের মানুষ তা মেনে নেবেন না।
প্রথম আলো: প্রচারের সময় আপনাদের ওপর একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে আপনার কি মনে হয় ভোটাররা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে যেতে পারবেন?
জায়েদা খাতুন: আমাদের সাপোর্টাররা বলার কারণেই আমরা টঙ্গীর দিকে প্রচারে গিয়েছি। টঙ্গীতে যাওয়ার কারণে তারা আমার গাড়িতে ও আমাদের ওপর আক্রমণ করেছে। এটা তো ভোটের সুষ্ঠু কোনো পরিবেশ না। তারা তো বলছে, কেন্দ্র দখল করে নেবে। আমাদের এজেন্টদের কেন্দ্রে যেতে দেবে না। আমাদের নেতা–কর্মীদের বাসায় গিয়ে হুমকি দিচ্ছে, ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
প্রথম আলো: নির্বাচন নিয়ে আপনার সার্বিক মূল্যায়ন কী?
জায়েদা খাতুন: নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন না করে একজন ব্যক্তির পক্ষে চলে গেছে। তাদের কাছে এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এরপরও আমার বিশ্বাস মানুষ ভোট দিতে আসবে, প্রতিবাদ হিসেবে ভোট দিতে আসবে।