অনেকে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন

আজিজ আহমেদ ও বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের কলকাতায় খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা। এ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রিয়াদুল করিম

প্রথম আলো:

দুটি বাহিনীর সাবেক দুই প্রধান আজিজ আহমেদ ও বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অভিযোগ এবং সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের খুনের ঘটনায় চোরাচালানের অভিযোগের বিষয়গুলো সামনে এসেছে। এ ঘটনাগুলো আপনি কীভাবে দেখেন?

মুজিবুল হক: সাবেক সেনাপ্রধান এবং পুলিশপ্রধান এই দুজনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এসেছে, তা খুবই দুঃখজনক। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁরা যেসব কাজকর্ম করেছেন, বিশেষ করে সাবেক আইজিপি, তাঁর বিরুদ্ধে তথ্যগুলো যেভাবে এসেছে, তাতে মনে হয়, এগুলো মিথ্যা নয়।

আমার মনে হয়, বর্তমান সরকার যারা তাদের পক্ষে কাজ করেছে, তাদের সম্পর্কে উদাসীন ছিল। সাবেক আইজিপি বেনজীর ক্ষমতায় থাকতে রাজনৈতিক নেতার মতো বক্তব্য রেখেছেন। সরকার এই জিনিসগুলো নিয়ন্ত্রণ না করায় তারা প্রশ্রয় পেয়েছে, এভাবে দুর্নীতি করার অবারিত সুযোগ পেয়েছে। এখন প্রকাশ পাওয়াতে সরকারের পক্ষে বা দুদকের তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া উপায় নেই বলে তদন্ত হচ্ছে। এ ধরনের আরও অনেক সরকারি আমলা, রাজনৈতিক নেতা আছেন, যাঁরা আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন।

ভারতে গিয়ে নৃশংসভাবে একজন এমপি খুন হলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ এসেছে। এগুলো সরকারের দেখা উচিত।

প্রথম আলো:

সরকার কেন ব্যবস্থা নেয় না বলে মনে করেন?

মুজিবুল হক: সরকারের ব্যর্থতার মধ্যে অন্যতম হলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া। কিন্তু সত্যিকার অর্থে ব্যবস্থা নিলে অনেক রাঘববোয়াল ধরা পড়ত। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় সরকার মনে করছে, তারা খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু বাস্তবে সরকারের জনপ্রিয়তা নেই। নানাভাবে কায়দা করে তারা ক্ষমতায় আছে। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে তারা অন্ধ হয়ে গেছে।

প্রথম আলো:

এই যে অভিযোগগুলো আসছে, এসব বিষয়ে জাতীয় সংসদে বিরোধী দল কোনো ভূমিকা নিতে পারে কি না?

মুজিবুল হক: আমরা ভূমিকা নিচ্ছি। জাতীয় সংসদে আমরা এগুলো তুলে ধরেছি, সামনেও তুলে ধরব। আমাদের চেয়ারম্যান জি এম কাদের, আমিসহ আমাদের দলের এমপিরা দুর্নীতি, পাচারের বিষয়গুলো বারবার তুলে ধরেছি। ব্যাংক লুটের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। কিন্তু সরকার আমাদের কথা পাত্তা দিচ্ছে না। তবে পাত্তা নিশ্চয় জনগণ দিচ্ছে, একদিন সরকার বুঝতে পারবে।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

এই তিন ঘটনায় এখন পর্যন্ত সরকারের যে ভূমিকা, তাতে কি আপনারা সন্তুষ্ট?

মুজিবুল হক: সন্তুষ্টির বিষয় না। সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ, পত্রিকার মাধ্যমেই বিষয়গুলো এসেছে। এরপর দুদক তাদের নলেজে নেয়। এখন সরকারও সহায়তা করছে।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

আর সাবেক সেনাপ্রধানের বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কী?

মুজিবুল হক: আসলে সাবেক সেনাপ্রধানের দুর্নীতির বিষয়ে আমরা অনুমাননির্ভর কিছু বলতে চাই না। এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য আমরা কোনো মাধ্যমে দেখতে পাইনি।