আমাদের ঠিকানা কারাগার, না হয় রাজপথ: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
ফাইল ছবি

গণতন্ত্র ফেরানোর লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের ঠিকানা হয় কারাগার, না হয় রাজপথ। এর মাঝখানে আর কিছু নেই।’

আজ বুধবার বিকেলে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না দেশের হারানো গণতন্ত্র ফিরে আসে, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, ততক্ষণ নেতা-কর্মীরা সব প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে রাজপথে থাকবে। তিনি বলেন, ‘দলের প্রতিটি কর্মসূচি আমাদের নেতা-কর্মীরা পালন করবে। আমাদের কারাগারে নিয়ে যেতে পারে, নানাভাবে আঘাত করতে পারে, অত্যাচার করতে পারে, সবকিছু বরণ করেই আমাদের অভিযাত্রা অব্যাহত থাকবে।’

গাজীপুরে ন্যায্য মজুরির দাবিতে আন্দোলনরত এক নারী পোশাকশ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে রিজভী সরকারের সমালোচনা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ কেন এত উৎসাহী, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে গণতান্ত্রিক শক্তির ওপর যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, রক্তাক্ত করা হয়েছে, তাতে তারা সরকারের আশকারা পেয়ে আরও উৎসাহী হয়ে পড়েছে। শুধু সরকারের কাছে নিজেদের কৃতিত্ব, অনাচারের কৃতিত্ব ফোটানোর জন্যই এ ধরনের পরিস্থিতি তারা (পুলিশ) তৈরি করেছে।

ছাত্রদল ঢাকা মহানগর পূর্বের সদস্যসচিব আল-আমীনকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘ছাত্রনেতা আল–আমীন এখন কোথায়, কীভাবে আছে আমরা জানি না। প্রতিদিন শেখ হাসিনার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং তাদের গোয়েন্দারা এই কাজগুলো করছে। এটি একটি সামগ্রিক নৈরাজ্য, ভীতির পরিবেশ তৈরি করা, যাতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাস্তায় না নামে।’

রিজভী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচিতে ৫১৫ জনের বেশি নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে, ১৮টি মামলায় ১ হাজার ৯২০ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর থেকে এই পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৪৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার ও ৫৭৯–এর বেশি মামলা করা হয়েছে বলে জানান বিএনপির এই নেতা।

ক্ষমতার নেশায় আসক্ত আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতার নেশায় অ্যাডিক্টেড (আসক্ত) বলে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, এ কারণে জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠানকেও তারা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে।

রিজভী বলেন, যে জাতিসংঘের সদস্য না হলে দেশটি যে পূর্ণাঙ্গ দেশ—তার কোনো সত্তা থাকে না, সেই জাতিসংঘকেও তারা অবজ্ঞা করছে। ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) জাতিসংঘকেও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছেন এবং তাঁদের (জাতিসংঘ) বক্তব্য-বিবৃতি ফালতু হিসেবে বিবেচনা করছেন। অথচ দেশে কী ঘটছে, এটা কি দেশবাসী, বিশ্ববাসী, আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো জানছে না? তাদের (আওয়ামী লীগের) এত ক্ষমতার উৎস কোথায়, যেখান থেকে তারা এসব কথাবার্তা বলছেন।

আরও পড়ুন

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোন ইউনিয়ন, কোন দেশ বিবৃতি দিল, তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। আমার দেশের আইনে, আমার দেশের অপরাধীকে আমি বিচার করতে পারব না, এ কোন ধরনের গণতন্ত্র? কোথা থেকে এসেছে এই আবেগ?’