সরকার কোনো কঠিন বার্তা দিতে পারেনি

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনলাইনে ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে নাশকতার ঘটনা ঘটছে। জনমনে উদ্বেগও আছে। সামনে নির্বাচন। এরই মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রশ্নে মতভিন্নতা থেকে মুখোমুখি রয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এমন পরিস্থিতি নিয়ে মানবাধিকারকর্মী মো. নূর খানের অভিমত।

মো. নূর খান

দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে জরুরি ছিল সমঝোতা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো রাজনৈতিক সমঝোতার আশা সুদূরপরাহত হয়েছে। আশা করা হয়েছিল, ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আসবে; কিন্তু তা হয়নি।

সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের রায়ের দিন ধার্য করার প্রাক্কালে সেই পুরোনো দিনের মতোই লকডাউনের নামে অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি শুরু হয়েছে। মানুষের মধ্যে একধরনের শঙ্কা, সংশয় তৈরি হয়েছে। ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এ রকম অবস্থায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে। এটি হচ্ছে দুই ভাবে। একটি হলো সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রীর বিচার বাধাগ্রস্ত করতে, আরেকটি হলো নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী—এই দুই দলের মুখোমুখি অবস্থান। এ রকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের অদক্ষতা ও নিজেদের প্রতি আস্থাহীনতা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

আরও পড়ুন

এ রকম পরিস্থিতিতে দরকার ছিল, সরকার একটি কঠিন বার্তা দেবে, যাতে সাধারণ জনগণ আস্থা পাবে, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা ভয় পাবে। কিন্তু সে জায়গায় সরকার কঠিন কোনো বার্তা দিতে পারেনি। এ রকম হলে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এই সুযোগে সমাজে যে দুর্বৃত্তরা রয়েছে, তারাও বেপরোয়া আচরণ শুরু করে। হত্যা, খুন, গণপিটুনির মাধ্যমে হত্যা, বিপক্ষ দলের নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা নানা জায়গায় ঘটে চলেছে। বিগত দিনে স্বৈরাচারী সরকার যে রকম কোনো ঘটনা ঘটার পরপরই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ না করে নিজেদের মতো করে বক্তব্য দিত, অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল থেকেও একই রকমের বক্তব্য আসছে। এ ধরনের বক্তব্য প্রকারান্তরে অপরাধীদের অপরাধ করতে উৎসাহী করে তোলে।

এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনগণকে সম্পৃক্ত করে নিরাপত্তাবলয় তৈরি করতে হয়। জনগণকে সম্পৃক্ত করে নিরাপত্তাবলয় তৈরির ক্ষেত্রে সরকারের যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে।

নূর খান: মানবাধিকারকর্মী