পদ্মা সেতুর কারণে মানুষ নির্বিঘ্নে ঈদে বাড়ি যেতে পেরেছেন: কাদের

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
ফাইল ছবি

পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ নির্বিঘ্নে ঈদে বাড়ি যেতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সভাকক্ষে ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ কথা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এবার ঈদের সময় সড়কের অবস্থা সব জায়গায় ভালো ছিল। একটা রুটে সমস্যা হয়েছে। সেটি হলো উত্তরাঞ্চল। কিন্তু সেটি হওয়ার কথা ছিল না। যেটা হয়েছে, সেটা কিছু ব্যবস্থাপনার ত্রুটি বা সমন্বয়ের অভাবে হয়েছে। তবে পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পেরেছেন।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর এক দিনে ৪৩টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। পদ্মা সেতুর ব্যাপার হচ্ছে, সেখানে কোনো গাড়ি যদি দুর্ঘটনায় পড়ে, সেই গাড়িটি সরানোর জায়গা আছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেতুতে সেই জায়গাটা নেই।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছর যেসব জায়গায় সড়কে ত্রুটি হয়েছে, সেগুলো বিবেচনায় নিয়েই ভবিষ্যতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যানজট যেখানে হয়েছে, সেটা হয়েছে ব্যবস্থাপনার কিছু ত্রুটির কারণে। একটা রুটে প্রবলেমটা বেশি হয়েছে, উত্তর জনপদ। হওয়ার কথা ছিল না, কেননা আমাদের ছয় লেন রোড অলরেডি হয়ে গেছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিজিএমইএ-বিকেএমইএকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছিল, পর্যায়ক্রমে পোশাক কারখানাগুলো ছুটি দেওয়ার জন্য। আগামী বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার চন্দ্রা-নবীনগর এলাকায় যানজট হয়েছে। হঠাৎ করে পোশাকশ্রমিকদের একসঙ্গে ছেড়ে দেওয়ায় ভোগান্তিটা বাড়ে। পর্যায়ক্রমে ছুটি হলে সমস্যা হতো না। সেটা তাঁরা করেনি বা করতে পারেনি।

মোটরসাইকেলের কারণে দুর্ঘটনা বেশি হয় জানিয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আরও মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন ছিল। কিছু কিছু অ্যালাও করা হয়েছিল। আবার কিছু কিছু আদেশ লঙ্ঘন করে হাইওয়েতে এসেছে। মোটরসাইকেলের কারণেই দুর্ঘটনা বেশি হয়। ছোট ছোট যে যানগুলো, তিন চাকার ইজিবাইক, এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা না হলে সমস্যার সৃষ্টি হয়।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সবকিছু একসঙ্গে হয় না। যাঁরা সমালোচনা করেন, বড় বড় কথা বলেন, তাঁদের একটা কাজ দেখান। যে কাজটা বাংলাদেশের মানুষের যানবাহন চলাচল সুবিধা করে দিয়েছে। কোথাও তাঁদের কোনো দৃশ্যমান কিছু নেই।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বহুলপ্রতীক্ষিত কালনা সেতু ও বেকুটিয়ায় অষ্টম চীন-বাংলা মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন করা হবে বলে জানান সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্প দুটি উদ্বোধন করবেন।

নির্মাণাধীন প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট এড়াতে ৪ লেনকে ৬ লেনে উন্নীতকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিলেটসহ অন্যান্য জেলায় বন্যার কারণে যেসব রাস্তার ক্ষতি হয়েছে, সেগুলোকে দ্রুত মেরামত করার নির্দেশনা দেন তিনি।

চলতি বছরের ডিসেম্বরে মেট্রোরেল ও আগামী বছরের শেষের দিকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করা সম্ভব হবে—এমন আশা প্রকাশ করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা (এক্সপ্রেসওয়ে) আগে ধীরগতি ছিল, এখন গতি বেড়েছে। আমরা অর্থায়নের সমস্যাটা দূর করেছি।’

শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরি, বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিকসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।