ইবনে বতুতার হজ সফর

মরক্কোর বিখ্যাত পর্যটক আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে বতুতা

মরক্কোর বিখ্যাত পর্যটক আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে বতুতা ২১ বছর বয়সে হজ করার জন্য মক্কার উদ্দেশে রওনা দেন জন্মভূমি তানজিয়ার থেকে। সেটা আজ থেকে ৭০০ বছর আগের কথা। ১৩২৫ সালের জুন মাসে সফর শুরু করেন হেঁটে। ফলে প্রায় এক বছর পর ১৩২৬ সালের নভেম্বর মাসে তিনি তাঁর প্রথম হজ সম্পন্ন করেন। হজ সেরে তিনি মধ্য এশিয়ার দিকে যাত্রা শুরু করেন। মোট আড়াই দশকের পথ পরিক্রমায় তিনি ১ লাখ ২০ হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ করেছেন। ভ্রমণকালে তিনি বাংলাদেশেও এসেছিলেন। তাঁর সফরনামা ‘রিহলা’য় উঠে এসেছে বিশ্বভ্রমণের বৈচিত্র্যময় বিবরণ।

ইবনে বতুতা অন্তত তিনবার, আরেক বিবরণ অনুসারে পাঁচবার হজ করেছেন। দ্বিতীয়বার ১৩২৯ বা ১৩৩০ সালে আর তৃতীয়বার ১৩৪৭ বা ১৩৪৯ সালে। তৃতীয়বার হজ সেরে তিনি নিজ দেশে তানজিয়ারে ফিরে যান। এর মধ্য দিয়ে তাঁর পশ্চিম আফ্রিকা থেকে চীন পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় আড়াই দশকের সফর শেষ হয়। এরপর তিনি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে আন্দালুসে (স্পেন) সফর করে আবার তানজিয়ারে আসেন। সেখান থেকে মরক্কোর ফেজ নগরীতে যান। সেখান সুলতান আবু ইনান ফারিজের পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁর ‘রিহলা’ রচনায় মনোনিবেশ করেন। প্রকৃতপক্ষে ইবনে বতুতার স্মৃতি থেকে বলে যাওয়া বিবরণের ভিত্তিতে সফরগাথা লিপিবদ্ধ করেছিলেন ইবনে জুজাই।

ইবনে বতুতা অন্তত তিনবার, আরেক বিবরণ অনুসারে পাঁচবার হজ করেছেন। তৃতীয়বার হজ সেরে তিনি নিজ দেশে তানজিয়ারে ফিরে যান। এর মধ্য দিয়ে তাঁর পশ্চিম আফ্রিকা থেকে চীন পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় আড়াই দশকের সফর শেষ হয়।
আরও পড়ুন

যাত্রা শুরু

ইবনে বতুতা জানাচ্ছেন, তিনি ৭২৫ হিজরির রজব মাসের ২ তারিখ বৃহস্পতিবার (১৩২৫ সালের ১৪ জুন) নিজ বাড়ি থেকে বের হন। তাঁর ভাষায়, ‘আমার জন্মভূমি তানজিয়ার থেকে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় রজব আমি বের হই মক্কার পবিত্র কাবাঘর ও মদিনায় নবীজির রওজা জিয়ারত করার নিয়তে। কোনো সঙ্গী বা কোনো কাফেলা না পেয়ে একাকী সফর শুরু করি। কারণ, ভেতর থেকে প্রবল তাগিদ বোধ করছিলাম এই দুই বিখ্যাত পূণ্যস্থান দর্শন করার জন্য। তাই সব প্রিয়জনকে ত্যাগ করে ঘর থেকে বেরিয়ে যাই যেভাবে পাখিরা তাদের নীড় ছেড়ে উড়ে যায়। আমার মা–বাবা তখন জীবিত। তাঁদের ছেড়ে যাওয়া আমার জন্য বড় ভারবাহী হয়ে ওঠে। যখন আলাদা হয়ে যাই, তখন আমরা সবাই বেদনাক্রান্ত হয়ে পড়ি। আমার বয়স তখন ২২ বছর।’

মিসরের আলেকজান্দ্রিয়ায়

তানজিয়ার থেকে রওনা হওয়ার প্রায় ১০ মাসের মাথায় ইবনে বতুতা মিসরের আলেকজান্দ্রিয়ায় পৌঁছান। সেখানে তিনি প্রায় দুই মাস অবস্থান করেছিলেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি ফেরাউনের বাতিঘর দেখতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি, এক পাশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। বর্গাকৃতির এই ভবন ছিল আকাশচুম্বী। এতে প্রবেশের একমাত্র দরজাটিও সমতল থেকে বেশ খানিকটা উঁচুতে। ...আমি ১৩৪৯ সালে মরক্কোতে ফেরার পথে আরেকবার বাতিঘরটিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তখন ওটা এতটা বিধ্বস্ত যে ভেতরে প্রবেশের বা দরজা পর্যন্ত ওঠার কোনো উপায়ই ছিল না।’

কোনো সঙ্গী বা কোনো কাফেলা না পেয়ে একাকী সফর শুরু করি। কারণ, ভেতর থেকে প্রবল তাগিদ বোধ করছিলাম এই দুই বিখ্যাত পূণ্যস্থান দর্শন করার জন্য।
ইবনে বতুতা, বিখ্যাত মুসলিম পর্যটক
আরও পড়ুন

ইবনে বতুতা আলেকজান্দ্রিয়ায় আল-মুরশিদি নামের এক পুণ্যবান ও জ্ঞানী ব্যক্তির সাক্ষাৎ পান। তিনি একটি গ্রামে জাগতিক সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বসবাস করতেন। অলৌকিকভাবে তাঁর খাবার আসত। তবে তাঁর কাছে লোকজনের ভিড় লেগেই থাকত। ইবনে বতুতা নিজের সাক্ষাতের ঘটনা লিখেছেন এভাবে, ‘যখন আমি শায়খের কাছে গেলাম, তিনি উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে আলিঙ্গন করলেন এবং তাঁর সঙ্গে খেতে বললেন। তাঁর পরনে ছিল কালো উলের কুর্তা। নামাজের সময় হলে তিনি আমাকে ইমামতি করতে বললেন। এরপর যে কয় দিন ওখানে ছিলাম, আমি তা-ই করেছি। রাতে যখন ঘুমানোর সময় হলো, তিনি আমাকে বললেন, ছাদে গিয়ে ঘুমাও। তখন গরমকালের প্রচণ্ড তাপে সবাই ওষ্ঠাগত। তাই তিনি আমাকে একটু আরামের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। সুলতানের দেহরক্ষী বাহিনীর একজন কর্মকর্তাও তখন তাঁর অতিথি ছিলেন। আমি প্রথমে সুলতানের সেই কর্মকর্তার জন্য ছাদে ঘুমানোর ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি কোরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে আমাকে বললেন, সবারই নির্ধারিত জায়গা আছে। আমি ছাদে গিয়ে দেখি, একটা খড়ের বিছানা, একটি চামড়ার পাটি আর হাতমুখ ধোয়া ও পান করার জন্য পানির একাধিক জগ। আমি ওখানে শুয়ে পড়লাম। সে রাতেই স্বপ্ন দেখলাম যে বিরাটাকায় একটি পাখির ডানায় আমি চেপে বসেছি আর পাখিটা আমাকে মক্কার দিকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পাখিটি দক্ষিণে ইয়েমেনের চলে পূর্বমুখী হয়ে আবার দক্ষিণমুখী হয়। তারপর আবার পূর্বমুখী হয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এক অন্ধকারাচ্ছন্ন ও সবুজ দেশে আলো জ্বেলে নামিয়ে দেয়।’

ঘুম থেকে জেগে ইবনে বতুতা স্তম্ভিত হয়ে যান। তিনি নিজেকে বলেন, ‘শেখ যদি আমাকে দেখে বলেন, আমি কী স্বপ্ন দেখেছি, তাহলে বুঝব যে লোকজন তাঁর সম্পর্কে যা বলে, তা সত্যি।’ পরে যা হলো তা ইবনে বতুতার ভাষায়, ‘ভোরে আমি ফজরের নামাজের ইমামতি করলাম। এরপর সুলতানের কর্মকর্তা তাঁর কাজে চলে গেলেন। শেখ আল-মুরশিদি অন্য দর্শানার্থীদের ছোট ছোট পিঠা দিলেন। তাঁরা চলে গেলেন। ইশরাকের নামাজের পর তিনি আমাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন যে আমি রাতে কী স্বপ্ন দেখেছি। আমি যা দেখেছি, তা বললাম। শুনে তিনি বললেন, তুমি মক্কায় হজ করতে ও মদিনায় রাসুল (সা.)-এর কবর জিয়ারত করতে যাচ্ছ। এরপর তুমি ইয়েমেন, ইরাক, তুরস্ক ও হিন্দুস্তান সফর করবে। হিন্দুস্তানে তুমি অনেক দিক থাকবে, যেখানে আমার ভাই দিলশাদের সঙ্গে তোমার দেখা হবে। তিনি তোমাকে একটা বড় বিপদ থেকে রক্ষা করবেন।’

সে রাতেই স্বপ্ন দেখলাম যে বিরাটাকায় একটি পাখির ডানায় আমি চেপে বসেছি আর পাখিটা আমাকে মক্কার দিকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
ইবনে বতুতা, বিখ্যাত মুসলিম পর্যটক
আরও পড়ুন

দামেস্ক হয়ে মদিনা

আলেকজান্দ্রিয়া থেকে বিভিন্ন শহর ও বন্দর পাড়ি দিয়ে ১৩২৬ সালের আগস্ট মাসে ইবনে বতুতা দামেস্কে হাজির হন। তখন ছিল রমজান মাস। তিনি ওখানকার মালিকি (মাজহাব পরিচালিত) কলেজে ছিলেন। দামেস্ক থেকে এক মাসের মাথায় রওনা দেন মক্কার উদ্দেশে। তিনি লিখেছেন, ‘শাওয়াল মাসের নতুন চাঁদ দেখা যাওয়ার পর হিজাজের একটি কাফেলা শহরের দক্ষিণ দিক দিয়ে যাত্রা শুরু করল। প্রথমে কাফেলাটি কিসউই গ্রামে তাঁবু গাড়ল। আমি এ কাফেলার সঙ্গে যোগ দিলাম। কিসউই থেকে আমরা সামামাইন গ্রাম পাড়ি দিয়ে হাওরান জেলার ছোট্ট শহর জু’রায় থামলাম। ওখান বিশ্রাম নিয়ে থেকে আরেকটি ছোট শহর বসরার দিকে অগ্রসর হলাম। কাফেলাগুলো সাধারণ এখাতে চার রাত যাত্রাবিরতি দেয় যেন কেউ পথে দলছুট হয়ে পড়লে এখানে এসে যেন যোগ দিতে পারে। মুহাম্মদ (সা.) যখন তরুণ ও খাদিজার ব্যবসায় নিযুক্ত কারবারি, তখন তিনি একবার এখানে এক খ্রিষ্টান ধর্মযাজকের (বুহাইরা) সাক্ষাৎ পান। বুহাইরা তাঁকে নবী হওয়ার আগাম আভাস দিয়েছিলেন। [প্রকৃতপক্ষে বুহাইরার সঙ্গে নবীর (সা.) সাক্ষাৎ হয়েছিল যখন তাঁর বয়স ১১ বা ১২ বছর। তিনি চাচা আবু তালিবের সওদাগরের কাফেলায় সিরিয়ায় যাওয়ার সময় এ সাক্ষাৎ হয়।

ইবনে বতুতার বর্ণনানুসারে, যে স্থানে মুহাম্মদ (সা.) উট বেঁধেছিলেন, সেখানে এখন একটি বড় মসজিদ আছে। হাওরানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন এখানে ছুটে আসেন হজযাত্রীদের কাছে সওদা বিক্রির জন্য। দীর্ঘ সফরে ইবনে বতুতা সিরিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করে তাবুক, তাহামুদ, উলা ও ইতাস উপত্যকা পেরিয়ে মদিনায় পৌঁছান। সেখানো কয়েক দিন থেকে তাঁরা মক্কার উদ্দেশে রওনা দেন। ইবনে বতুতার ভাষায়, ‘যখন মদিনা ছেড়ে মক্কার দিকে যাত্রা শুরু হলো, তখন আমরা জুলহুলাইফা মসজিদের কাছে এসে থামলাম। এখানেই নবীজি (সা.) তাঁর বিদায়ী হজের জন্য ইহরাম বেঁধেছিলেন। মদিনা থেকে পাঁচ মাইল দূরে আকিক উপত্যকার পাশে। এটা পবিত্র মদিনা নগরীর অন্যতম সীমানা নির্দেশক। এখানে এসে আমি আমার সেলাই করা জামা-কাপড় খুলে ফেললাম। তারপর গোসল করে সেলাইবিহীন দুই খণ্ড সাদা কাপড় গায়ে জড়িয়ে নিয়ে নিয়মমাফিক নামাজ আদায় করলাম। এভাবেই আমি ইহরাম বেঁধে হজ আদায়ের নিয়ত করলাম, যা ওমরাহ থেকে আলাদা। আমি এতটা উদ্বেল হয়ে পড়েছিলাম যে কাফেলার সবার তালবিয়া পড়ার নেতৃত্ব দিতে থাকলাম। তালবিয়া পড়তে পড়তে পাহাড় ও উপত্যকা পেরিয়ে গিরি আলীতে এসে আমরা রাতের বিশ্রামের জন্য থামলাম।’

ইবনে বতুতার বর্ণনানুসারে, যে স্থানে মুহাম্মদ (সা.) উট বেঁধেছিলেন, সেখানে এখন একটি বড় মসজিদ আছে। হাওরানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন এখানে ছুটে আসেন হজযাত্রীদের কাছে সওদা বিক্রির জন্য।
আরও পড়ুন

মক্কায় আগমন

ইবনে বতুতা লিখেছেন, ‘আমি যখন মক্কায় আসি, তখন মক্কার আমির [শরিফ হিসেবেই বেশি পরিচিত] ছিলেন দুই ভাই—রুমাইসা ও আতাইফা। তাঁরা ছিলেন আবু নাইম কিতাদার দুই পুত্র। তাঁরা সবাই মহানবী (সা.)-এর নাতি হাসানের বংশধর। বয়সে বড় হলেও রুমাইসা শুক্রবার জুমার খুতবায় তাঁর নিজের নামের আগে ছোট ভাই আতাইফার নাম উচ্চারণের জন্য বলেছিলেন। কারণ, ন্যায় বিচারক হিসেবে আতাইফার ব্যাপক সুখ্যাতি ছিল। মারওয়া পাহাড়ের ডান দিক ছিল আতাইফার বাড়ি। আর রুমাইসা বাস করতেন বনি শায়েবা ফটকের কাছে আল-শারাবি নির্জনাবাসে। প্রতিদিন সকালে তাঁদের বাসভবনের দরজার বাইরে ঢাক পেটানো হতো।’

মক্কায় গিয়ে ইবনে বতুতা প্রথম যখন পবিত্র কাবাঘর দেখলেন, তখন তাঁর মনে হয়েছিল যে নববধূর মতো ভীরু-কম্পিত অথচ গর্বিত পা ফেলে তিনি অগ্রসর হচ্ছেন। তাঁর ভাষায়, ‘…আমরা সাতবার কাবা প্রদক্ষিণ করলাম এবং পবিত্র পাথরে (হাজরে আসওয়াদ) চুম্বন করলাম। এরপর মাকামে ইবরাহিমের পেছনে দুই রাকাত নামাজ আদায় করলাম। …আমরা অনেকক্ষণ কাবার গিলাফ আঁকড়ে ধরে ছিলাম...যেখানে দোয়া কবুল হয়। ...জমজমের পানি পান করার পর সাফা-মারাওয়ায় দৌড়ালাম [সাঈ]।’

মক্কায় গিয়ে ইবনে বতুতা প্রথম যখন পবিত্র কাবাঘর দেখলেন, তখন তাঁর মনে হয়েছিল যে নববধূর মতো ভীরু-কম্পিত অথচ গর্বিত পা ফেলে তিনি অগ্রসর হচ্ছেন।
আরও পড়ুন

ইবনে বতুতা ওই সময়ের হজের আচার-অনুষ্ঠানের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। তাঁর লেখা থেকে জানা যায় যে জিলহজ মাসের প্রথম দিন সকাল ও সন্ধ্যায় এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রাক্কালে ঢাক ও দামামা বাজানো হয়। আরাফার দিন [৯ জিলহজ] শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত প্রতিদিনই এমনটা করা হয় হজের মৌসুম পালনের জন্য। তিনি লিখেছেন, ‘৭ জিলহজ জোহরের নামাজের পর ইমাম সাহেব চমৎকার এক ভাষণ দিলেন। এতে তিনি হজ পালনের নিয়ম-কানুনসহ বিভিন্ন নির্দেশনা তুলে ধরেন ও আরাফার দিন সম্পর্কে অবহিত করেন। ৮ জিলহজ সকাল থেকেই লোকজন মিনার দিকে যাত্রা করে। সিরিয়া, মিসর ও ইরাকের আমিররা বেশ বড় বহর নিয়ে এসেছিলেন। মিনায় রাতযাপনকালে তাঁদের মধ্যে জাঁকজমকের প্রতিযোগিতা শুরু হয় মোমবাতির আলো জ্বালানোর মধ্য দিয়ে। অবশ্য বরাবর এ ক্ষেত্রে সিরীয়রা সবার চেয়ে এগিয়ে থাকে।’

নিজের হজের সময়টা তুলে ধরতে চেয়ে ইবনে বতুতা লিখেছেন, ‘আরাফাতে আমার প্রথম অবস্থানের দিনটা ছিল বৃহস্পতিবার, ৭২৬ হিজরি [নভেম্বর ৬, ১৩২৬]।…সূর্যাস্তের পর ভিড় ঠেলে আমরা মুজদালিফায় গিয়ে পৌঁছালাম। ওখানে আমরা একত্রে মাগরিব ও ইশার নামাজ আদায় করলাম। এটাই রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ। পরদিন ভোরে ফজরের নামাজ আদায় করে মিনার উদ্দেশে রওনা দিলাম। যাত্রাপথে আমরা মাশআর আল-হারামে থেমে দোয়া করলাম। পুরা মুজদালিফাতেই থামা যায়, শুধু ওয়াদি মুহাসসির ছাড়া। হাজিরা এ স্থানটুকু দ্রুত হেঁটে অতিক্রম করেন। বেশির ভাগ হাজিই মুজদালিফা থেকে পাথর সংগ্রহ করেন জামারায় ছোড়ার জন্য। এটাই বলা হয়েছে। তবে কেউ কেউ আল-খায়েফ মসজিদের আশপাশ থেকে পাথর সংগ্রহ করেন।’

আরও পড়ুন