এশিয়া কাপে ভারতের বাড়তি সুবিধা পাওয়ার অভিযোগ

সুপার ফোরের সূচি নিয়ে অসন্তুষ্ট বাংলাদেশ। ছবি: বিসিবি
সুপার ফোরের সূচি নিয়ে অসন্তুষ্ট বাংলাদেশ। ছবি: বিসিবি
>গ্রুপ পর্বের ম্যাচ শেষ হওয়ার আগে সুপার ফোরের সূচি প্রকাশ করেছে এসিসি। এই সূচি নিয়ে বেশ হইচই হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, সব দল আবুধাবিতে খেললেও শুধু ভারত কেন দুবাইয়ে খেলবে?

এসিসি এশিয়া কাপের সুপার ফোরের যে সূচি প্রকাশ করেছিল সেটিতে ২১ সেপ্টেম্বরের খেলা ছিল এমন—গ্রুপ ‘এ’ কোয়ালিফায়ার ১ বনাম গ্রুপ ‘বি’ কোয়ালিফায়ার ২। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) সরাসরি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন কিংবা রানার্সআপের কথা না বলেও আইসিসি এশিয়া কাপের সূচি প্রকাশ করেছিল গ্রুপ পর্বের চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপ ধরে। যেহেতু গ্রুপ পর্ব এখনো শেষ হয়নি, আইসিসির সূচি অনুযায়ী এখনো বলার উপায় নেই কোন দল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন কিংবা রানার্সআপ। এমন সূচিতে সবচেয়ে সুবিধা পাওয়া দলটির নাম ভারত। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম তো সরাসরি প্রশ্নই তুলেছে, মঙ্গলবার (গতকাল) এসিসি যে সূচি ঘোষণা করল, তাতে প্রতীয়মান হয় কার্যত ভারতকে সন্তুষ্ট রাখতেই এমনটা করা হয়েছে।

এসিসি অবশ্য গ্রুপ পর্ব শেষের অপেক্ষায় থাকেনি। সুপার ফোরের সূচি প্রকাশ করেছে চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপ নির্ধারিত হওয়ার আগেই। ‘বি’ গ্রুপে থাকা বাংলাদেশকে ধরা হয়েছে বি-২ দল হিসেবে এবং আফগানিস্তানকে বি-১। একইভাবে আজকের ম্যাচের আগেই ভারত এ-১ ও পাকিস্তান এ-২।

প্রশ্নটা এখানেই, কাল বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের ম্যাচের আগেই কীভাবে এসিসি নির্ধারিত করে ফেলল বাংলাদেশ ‘বি-২’ কিংবা আজ ভারত পাকিস্তানের ম্যাচের আগে ‘এ-২’? এসিসি যুক্তি দিতে পারে, তারা তো চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপের কথাও বলেনি। তবুও প্রশ্ন, গ্রুপ পর্ব শেষ হওয়ার আগেই কোয়ালিফায়ার-১ কিংবা ২ ঠিক করে ফেলল? এটা ঠিক, এবার এশিয়া কাপের যে সূচি করা হয়েছে তাতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন কিংবা রানার্সআপের ওপর সুপার ফোরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নির্ভর করছে না। শেষ চারের লড়াইয়ে প্রতিটি দলই একে অপরের বিপক্ষে খেলবে। এখানে মূল চিন্তা হচ্ছে ভেন্যু।

এখন সব দল অবস্থান করছে দুবাইয়ে। কিন্তু টুর্নামেন্টের পাঁচটি ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছে দুবাই থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরের আবুধাবিতে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন-রানার্স আপের বিষয়টা থাকলে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের অপেক্ষায় থাকতে হতো, কে কোন মাঠে খেলবে। ভারত যদি ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ হয় তবে তাদের দুটি ম্যাচ খেলতে হতো আবুধাবিতে।

এসিসি আগাম যে এ-১, এ-২ কিংবা বি-১, বি-২ নির্ধারণ করে দিয়েছে তাতে ভারতের প্রতিটি ম্যাচ পড়েছে দুবাইয়ে। অথচ বাকি তিনটি দলকেই দুটি করে ম্যাচ খেলতে হবে আবুধাবিতে। 

এমনিতে টানা সূচি, তপ্ত আবহাওয়া। সঙ্গে যোগ করুন, দুবাই থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টার ভ্রমণ ধকল। স্বাভাবিকভাবেই এসিসির এ সূচি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ যেমন তাঁদের সংবাদমাধ্যমকে বলছেন, ‘ভ্রমণ একটা বিষয়। যদি আপনাকে ম্যাচের মধ্যে ভ্রমণ করতে হয় তবে খেলাটা কঠিন হয়ে যায়। এই আবহাওয়া, টানা খেলা, আমার মনে হয় সবাইকে সমান সুবিধা দেওয়া উচিত, এখানে ভারত-পাকিস্তান কোনো ব্যাপার নয়। যদি আবুধাবিতে ম্যাচ থাকে তবে সব দলেরই সেখানে খেলা থাকা উচিত। জানি না এসিসি এটা নিয়ে কী করেছে।’

বিসিবি মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস অবশ্য বিস্তারিত না জেনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তাঁরও কথা, ‘যদি বাইলজে থাকে, টুর্নামেন্ট টেকনিক্যাল কমিটি যেকোনো সময় সূচি বদলাতে পারবে, তাহলে তো কিছু বলার নেই। তবে আমাদের কথা, সব দলকেই সমান সুযোগ দেওয়া উচিত।’

আরও পড়ুন