ভারতকে 'ইউটার্ন'-এর শিকার বানালেন টার্নার

অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেছেন টার্নার। ছবি: টুইটার
অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেছেন টার্নার। ছবি: টুইটার

৫৩ বলে ৮৮ রান দরকার, এমন অবস্থায় আউট সেঞ্চুরিয়ান পিটার হ্যান্ডসকম্ব। ৩৫৯ রানের লক্ষ্যে ছোটা অস্ট্রেলিয়ার স্বপ্নটা তখন শেষ বলেই মনে হচ্ছিল। ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ ভারতের হাতের মুঠোয়। কিন্তু অ্যাশটন টার্নার ভাবলেন ভিন্ন কিছু। এমন ভয়ংকর রুদ্রমূর্তি ধরলেন যে ভারতীয় বোলাররা সব নেমে এলেন গলির মানে! ৩৫৯ রানের বিশাল লক্ষ্য অস্ট্রেলিয়া ছুঁয়ে ফেলল ১৩ বল হাতে রেখে! ৪ উইকেটের জয়ে সিরিজে সমতা আনল অস্ট্রেলিয়া। ভারতের মাটিতে  দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করার রেকর্ড গড়ে।

৩৫৯ রানের লক্ষ্যটা একসময় অসম্ভব মনে হচ্ছিল। উসমান খাজা ও পিটার হ্যান্ডসকম্ব সেটাকে সম্ভব মনে করাচ্ছিলেন। কিন্তু প্রথমে খাজা ও পরে হ্যান্ডসকম্বের বিদায়ে ম্যাচের লাগাম ভারতের কাছে চলে আসে। এর মাঝেই ফিরে গেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। হ্যান্ডসকম্বের সঙ্গে পঞ্চম উইকেট জুটিতে বেশ কিছু রান করেছিলেন টার্নার। কিন্তু ভারতের চিন্তার কোনো কারণ ছিল না। একে তো মাত্রই সপ্তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেছেন। তার ওপর আগের সব ম্যাচ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর অবদান ৪৭! ২৭ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান নিয়ে ভাবতে বয়েই গিয়েছে ভারতের। সেই টার্নার নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক ফিফটিকেই ম্যাচ জেতানো ইনিংসে রূপ দিলেন। ৪৩ বলে ৮৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন টার্নার। ৫ চার ও ৬ ছক্কা ছিল এ ইনিংসে।

১০৫ বলে ১১৭ রান করে ফিরেছেন হ্যান্ডসকম্ব। ১২ রানে ২ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচ জেতানোর পথে তাঁর সঙ্গী খাজার অবদান ৯১। কিন্তু ভারতকে হারটা উপহার দিয়েছেন টার্নার। হ্যান্ডসকম্ব যখন আউট হচ্ছেন, তখনো টার্নারের নামের পাশে মাত্র ২৬ রান। সেটাও এসেছে ১৮ বলে। পরিস্থিতি বিবেচনায় খুব একটা ভালো নয়। যুজবেন্দ্র চাহালের সে ওভারেই একটা ছক্কা মারলেন। পরের ওভারে একটি চার। ৭ ওভারে ৭২ রান দরকার অস্ট্রেলিয়ার। পরের ওভারেও কোনো চার-ছক্কা নেই, তবু চাহালের অনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে এল ১০ রান। ৬ ওভারে ৬২ রানের সমীকরণ, বেশ কঠিনই।

ভুবনেশ্বর কুমারকে টানা চার ও ছক্কায় ৩৩তম বলে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি পেয়ে গেলেন। ওভার শেষ করলেন আরেক ছক্কায়। হঠাৎ করেই লক্ষ্যটা হাতের নাগালে। ৩০ বলে দরকার ৪২ রান। জসপ্রীত বুমরার ওভার, তাই আশা দেখছিল ভারত। পঞ্চম বলটাই হয়তো ম্যাচের ভাগ্য লিখে দিলে। অফ সাইডে ওয়াইডের বাইরে ফুল লেংথের বল। সেটা এবি ডি ভিলিয়ার্সকে মনে করিয়ে দেওয়া এক স্কুপে ফাইন লেগ দিয়ে সীমানার ওপারে। ওই ওভারে এল ১৬ রান। ৪ ওভারে মাত্র ২৬ রান দরকার অস্ট্রেলিয়ার! পরের ওভারে অনেক কিছুই হলো, চার , ছক্কা, চার এবং এর মাঝে টার্নারের একটা ক্যাচও ফেললেন শিখর ধাওয়ান।

৩ ওভারে ৮ রান নিতে কোনো কষ্ট হয়নি টার্নারের। চতুর্থ বলে অ্যালেক্স ক্যারি (২১) আউট হওয়ায় থামে ৩৯ বলে ৮৬ রানের জুটি। পরের বলেই ম্যাচ শেষ করে দিয়েছেন টার্নার।