ওল্ড ট্রাফোর্ডে পাকিস্তানি জার্সি নিয়ে বিতর্ক: খাজার প্রশ্ন, জার্সি ঢাকতে বলাটা কি বৈধ
সর্বশেষ ৬ বছরে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে শুধু টেস্ট খেলারই সুযোগ পেয়েছেন উসমান। এই তথ্যে খাজার ব্যাটিংকে রক্ষণাত্মক মনে হতে পারে, তবে চিন্তা-ভাবনায় অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার বেশ প্রতিবাদী। গত ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট চলাকালীন ফিলিস্তিনের সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়ায় চাকরি হারান অস্ট্রেলিয়ার রেডিও স্টেশন এসইএনের সাংবাদিক পিটার লালোর। এর প্রতিবাদে খাজা গত মাসে অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেরর সময় সেই সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেননি। শুধু কী তা–ই, লালোর চাকরি হারানোর পর পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত খাজা তাঁর সমর্থনে ইনস্টাগ্রামে পোস্টও করেছিলেন। এবার খাজা প্রতিবাদী হয়ে উঠলেন ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে বিতর্কিত এক ঘটনায়।
ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজে ওল্ড ট্রাফোর্ডে চতুর্থ টেস্ট গত রোববার ড্র হয়। এই ম্যাচের কোন দিন ঘটনাটি ঘটেছে, তা নিশ্চিত করতে পারেনি ইএসপিএনক্রিকইনফো, তবে ক্রিকেটবিষয়ক এই ওয়েব পোর্টাল গতকাল জানায়, গ্যালারিতে পাকিস্তানের জার্সি পরে এসেছিলেন এক দর্শক। মাঠের নিরাপত্তাকর্মী তাঁকে জার্সিটি ঢেকে ফেলতে বলেন। সেটি না করে স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যান সেই সমর্থক। এ ঘটনায় তদন্তে নেমেছে কাউন্টি ক্লাব ল্যাঙ্কাশায়ার। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড ল্যাঙ্কাশায়ারের ঘরের মাঠ।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, সেই দর্শকের নাম ফারুক নজর। গালফ নিউজ জানিয়েছে, ধর্মীয় একটি টিভি চ্যানেলে সাংবাদিক তিনি। সংক্ষিপ্ত সংস্করণে পাকিস্তানের সবুজ জার্সি পরে ওল্ড ট্রাফোর্ডের গ্যালারিতে গিয়েছিলেন ফারুক নজর। শুরুতে মাঠের নিরাপত্তারক্ষীদের এক সদস্য ফারুককে জার্সি ঢেকে রাখার অনুরোধ করেন, ‘আমাকে কন্ট্রোল রুম থেকে বলা হয়েছে, আপনি যদি ওই শার্টটা ঢেকে রাখতে পারেন, ভালো হয়।’ পরে আরেকজন স্টুয়ার্ড এসে বলেন, ‘জার্সিটা “জাতীয়তাবাদী” হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।’
জার্সি ঢেকে ফেলার নির্দেশ পাওয়ার প্রমাণ রাখতে ফারুক এই ঘটনার ভিডিও পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও সুপার জানিয়েছে, জার্সি ঢাকার নির্দেশ পাওয়ার পর ফারুক নজর পাল্টা বলেন, ‘আপনারা কি লিখিত নির্দেশ দেখাতে পারেন? অর্থ খরচ করে টিকিট কিনেছি। এটা মেনে নিতে হলে আমার লিখিত (আদেশ) প্রয়োজন।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাকিস্তানের জার্সি ঢাকার এই আদেশের ভিডিও ভাইরাল হতে দেরি হয়নি। খাজা সেই ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে পোস্ট করেন নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে। সেখানে খাজা ল্যাঙ্কাশায়ার ক্রিকেট ক্লাবের নাম একপাশে রেখে বড় করে লেখেন, ‘এটা বৈধ হতে পারে না...?’
জিও সুপার জানিয়েছে, একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক নজরকে তাঁর জার্সি ঢেকে রাখতে বলার কারণ বুঝিয়ে বলেন। কিন্তু ফারুক নজর রাজি হননি। অফিশিয়ালদের তিনি বলেন, ‘আমি জার্সি ঢাকব না; কারণ, আমি আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। আপনারা জোর করে আমাকে ঢাকতে বাধ্য করতে পারেন। আপনারা আমার সঙ্গে কী করছেন, সেটা সবাইকে ভিডিও করতে দিন। টিকিট কেটে এসেছি, ভারতের কোনো সমর্থক আমার বিপক্ষে অভিযোগ করেননি।’
ল্যাঙ্কাশায়ার এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে, তা নিশ্চিত করেছেন ক্লাবটির মুখপাত্র, ‘এই ঘটনা আমাদের কানে এসেছে এবং পুরো ব্যাপারটি বুঝতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।’