ব্যাটিং অর্ডারে ক্লাব ক্রিকেটের মতো অদলবদল হচ্ছে

বাস্তবতা অনুযায়ী জয় পাওয়া কঠিন ছিল। কিন্তু এ ম্যাচে পারফরম্যান্সটা আরও অনেক ভালো হতে পারত।

একই মাঠ হলেও ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের উইকেটটির চেয়ে একেবারেই আলাদা ধরন ও নতুন একটি উইকেটে খেলা হয়েছে। দুই দলই বুঝেছে এটি ব্যাটিং–সহায়ক হবে। যেকোনো ম্যাচেই উইকেটের গতি-বাউন্স-মুভমেন্ট বুঝতে প্রথম বলটা একটু দেখা দরকার। আগের ম্যাচে রান পাওয়া লিটন একটু চেষ্টা করলে এ উইকেটে ভালো একটি ইনিংস খেলতে পারতেন। তবে ট্রেন্ট বোল্টের মতো বোলারের বিপক্ষে তাঁর শটটিকে অতি আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে। তানজিদেরও দারুণ একটা সুযোগ ছিল, উইকেটটা তাঁর জন্য আদর্শ হতে পারত।

ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে আসলে শুরু থেকেই ক্লাব ক্রিকেটের মতো অদলবদল হচ্ছে। তবে এমন উইকেটে মেকশিফট কারও তিন নম্বরে আসা উচিত নয়। নাজমুল তিনে, সাকিব ও হৃদয় চার ও পাঁচে—ভালো উইকেটে যাঁরা পরীক্ষিত, তাঁদেরকে নিজ নিজ জায়গাতেই দেখতে চাইছিলাম।

দ্রুত ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও মেরামত হয়েছিল, কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বোলিং আক্রমণ বৈচিত্র্যময়। ক্রমাগত শর্ট বল করে ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতে ফেলার সামর্থ্য আছে লকি ফার্গুসনের মতো বোলারের। মুশফিকের আউটটা হয়তো দুর্ভাগ্যজনক, তিনি থাকলে স্কোরটা আরেকটু বড় হতো। ব্যাটিং পজিশন নিচে নেমে গেলেও হৃদয় ওভার পেয়েছেন। তিনিও সুযোগ হারিয়েছেন।

মাহমুদউল্লাহ এ বার্তা দিতে পেরেছেন, তাঁকে নিয়েই আরও আগে থেকেই নির্বাচকদের পরিকল্পনা করা উচিত ছিল, তাঁকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনাটা সমীচীন হয়নি
এএফপি

পিচ ও মাঠের আকার দেখে বাড়তি একজন ব্যাটসম্যান খেলানোর পরিকল্পনাকে সমর্থনই করি আমি। আর মাহমুদউল্লাহ এ বার্তা দিতে পেরেছেন, তাঁকে নিয়েই আরও আগে থেকেই নির্বাচকদের পরিকল্পনা করা উচিত ছিল, তাঁকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনাটা সমীচীন হয়নি। তবে আমার মনে হয়, সাত ব্যাটসম্যানেরই ৫০ ওভার খেলা উচিত ছিল, আট নম্বর পর্যন্ত যাওয়াই উচিত হয়নি।

অনেক দিন পর নতুন বলে বোলিংটা বেশ ভালো হয়েছে। এক প্রান্তে তাসকিনকে দেখলে ভালো লাগত। তবে বাঁহাতিদের বিপক্ষে ততটা সাবলীল নন, সেটিও বুঝি। এ ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ আছে। হাফ চান্সগুলো নিতে পারলে হয়তো ২-৩টি উইকেট নেওয়া যেত শুরুতে, সে ক্ষেত্রে একটু প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ার সুযোগ আসত। তবে নিউজিল্যান্ডের প্রশংসা করতেই হয়, এ উইকেটের ধরন অনুযায়ী সতর্ক ব্যাটিং করেছে সে সময়।

ম্যাচের আগে থেকেই দলটি পিছিয়ে ছিল। খুব কম সময়ের মধ্যে দুটি ম্যাচ খেলতে হয়েছে দুটি শক্তিশালী দলের বিপক্ষে। তবে মনে রাখতে হবে, নিরপেক্ষ ভেন্যু শক্তি ও পারফরম্যান্স দেখানোর সেরা জায়গা। দেশের মাটিতে হোম কন্ডিশনের সুবিধা নিয়ে ‘বাংলাওয়াশ’ করার আত্মতৃপ্তিতে ভুগে কিছু হয় না। সেসবের মূল্য এমন বৈশ্বিক আসরে দিতে হয়।

শেষ ৫ ওভারে তাদের আক্রমণ দেখেই আরেকবার বোঝা গেছে, ডেথ ওভারে বোলিংয়ে বাংলাদেশের উন্নতির জায়গা আছে। বিশেষ করে উইকেটের সহায়তা না থাকলে। প্রতিদিন পিচ সহায়তা করবে না। সেখানে কৌশল খাটাতে হবে। টুর্নামেন্টের মধ্যে বিশাল উন্নতির সুযোগ নেই, তবে আলোচনা করার, ছোটখাটো ব্যাপার ঠিকঠাক করার সুযোগ আছে।

  • গাজী আশরাফ হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক

আরও পড়ুন