হৃদয় ৭.৫, মুশফিক ১

জয়–পরাজয় অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিশ্বকাপের আগে এমন একটা সিরিজের ম্যাচের মূল্যায়ন আসলে সেটির বাইরে থেকে করতে হবে। প্রতিটি প্রক্রিয়া কে কতটুকু অনুসরণ করতে পারল, কতটুকু কার্যকর হলো—সেদিকে নজর দিয়ে মূল্যায়নের চেষ্টা করব। হয়তো ম্যাচ জিতলে কেউ বাড়তি কিছু পাবে।

তামিম ইকবাল: ২/১০

মোটামুটি শুরু পেয়েছিল, সুযোগ ছিল সেটি কাজে লাগানোর। তবে আউটটা হলো বেশ আলগাভাবে। উইকেটটা অনেক রানের না, অসম বাউন্স ছিল, বল ব্যাটে আসছিল না সেভাবে। সেসব বুঝে ওপরে একটু ধরে খেলার দরকার ছিল। তামিমের পক্ষে ইনিংসটি আরেকটু ভালোভাবে গড়ার সুযোগ ছিল, যেটি শেষ পর্যন্ত পারেনি।

লিটন দাস: ৩/১০

লিটন শুরু থেকে খুব একটা স্বস্তিতে ছিল মনে হয়নি। সেও আলগাভাবে আউট হয়েছে। সম্প্রতি টপ অর্ডারে বড় স্কোর এসেছে, ফলে এ ম্যাচেও সেটি প্রত্যাশিত ছিল। ওর আউটের বলটা হয়ত অতটা ওঠেনি, যতটা প্রত্যাশা করেছিল। সে কারণে হয়তো ঠিকঠাক হয়নি শটটা।

নাজমুল হোসেন: ২/১০

শুরু থেকেই থিতু মনে হচ্ছিল, বিশেষ করে যে দুটি শটে চার মারল। তবে এতেই অতি-আত্মবিশ্বাসী হয়ে গেল কি না, নিশ্চিত না। উইকেট ধরে রাখার চেষ্টাটা করা উচিত ছিল, নিজ থেকে অতটা আক্রমণাত্মক না হলেও পারত। সাম্প্রতিক ফর্মটাও কাজে লাগাতে পারেনি, মনে হয়েছে ঠিক আদর্শ মানসিক অবস্থায় ছিল না। ওর সামর্থ্য কাজে না লাগানোর কারণেও নম্বর কম পাবে।

আরও পড়ুন

সাকিব আল হাসান: ৬/১০

উইকেট পড়ে যাওয়ার পর সাকিবের অ্যাপ্রোচটা ভালো লেগেছে। সাধারণত যেমন প্রতি আক্রমণে যায়, সেটি থেকে বের হয়ে খেলার চেষ্টা করেছে। এটি ইতিবাচক দিক ভবিষ্যতের জন্য। এ উইকেটে অন দ্য আপ খেলা কঠিন, সেটিই বুমেরাং হয়ে গেছে। তবে বোলিংয়ে খুব ভালো করেছে, আঁটসাঁট করেছে, ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছে। ম্যাচ পুরো হলে পরে হয়তো আরও কার্যকর হতো বোলিংটা।

তাওহিদ হৃদয়: ৭.৫/১০

হৃদয় যে স্কিলফুল অনেক, সেটি বোঝা গেল আবার। এ উইকেটে রানের ধারা ধরে রাখা সহজ না। সাকিবকেও ডট খেলতে হয়েছে। সেখানে পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলেছে কঠিন একটা পজিশনে। শেষ কয়েক ওভার থাকলে হয়তো স্কোরটা আরেকটু বড় হতো। পরিস্থিতি অনুযায়ী তার যে কৌশল, সেটি ভালো লেগেছে। এ ম্যাচে নিশ্চিতভাবেই সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স ওর ব্যাটিং-ই।

হৃদয় যে স্কিলফুল অনেক, সেটি বোঝা গেল আবার
শামসুল হক

মুশফিকুর রহিম: ১/১০

বলটা শুধু শর্ট লেংথ দেখেই টেনে খেলতে গেল। কিন্তু বল কতটুকু উঠল, টার্ন কতটুকু করল, রশিদের বলে অনেক কিছু হয়—কিছুই খেয়াল করেনি। উইকেট পড়ে যাওয়ার পর জুটি গড়ার চেষ্টা করতে হতো, আরেকটু সতর্ক থাকতে পারত।

আফিফ হোসেন: ১/১০

তাকেও ১-এর বেশি দিতে পারছি না। মুশফিকের মতো সেও পরিস্থিতি বুঝে খেলতে পারেনি।

মেহেদী হাসান মিরাজ: ৩/১০

ব্যাটিংয়ে চেষ্টা করেছে, বোলিংয়ে তো আসেইনি। মিরাজ এমনিতে ২৩ বলে ৫ রান করার মতো ব্যাটসম্যান না। উইকেটটা যে সহজ ছিল না, তার ব্যাটিংয়েই বোঝা যায়। তবে তার চেষ্টার কারণে আসলে ৩ দেওয়া যায়।

আরও পড়ুন

তাসকিন আহমেদ: ৫/১০

পুঁজি এত কম, আফগান ব্যাটসম্যানদের ঝুঁকি নিতে হয়নি বোলারদের বিপক্ষে। সে কারণে তারা রিস্ক ফ্রি ক্রিকেট খেলতে পেরেছে। তাসকিনও আঁটসাঁট করেছে, পরে একটা উইকেটও পেয়েছে। যা করেছে, তাতে ৫ পেতেই পারে।

আসলে ম্যাচ হারল বলে বোলাররা একটু কম পেল
প্রথম আলো

হাসান মাহমুদ: ৪.৫/১০

ওর যে স্কিল অ্যাপ্লিকেশনের ব্যাপার, হুটহাট আক্রমণ করা বাউন্সার বা ইয়র্কার দিয়ে—সেগুলো করেছে। তবে পুঁজি ছিল না বলে চাপ তৈরি করতে পারেনি সেভাবে। তাকেও প্রচেষ্টার কারণেই এ নম্বর দেওয়া।

মোস্তাফিজুর রহমান: ৪/১০

আশা ছিল আরেকটু আক্রমণাত্মক বোলিং করবে, ব্রেকথ্রু দেবে। সেভাবে সুযোগ তৈরি করতে দেখিনি। নতুন বলে ব্যাটসম্যানকে আরেকটু চাপে হয়তো ফেলতে পারত। তবে একেবারে খারাপ করেছে, তা বলব না। আসলে ম্যাচ হারল বলে বোলাররা একটু কম পেল। তাদের খুব বেশি কিছু করার ছিলও না। তবুও কিছু ইতিবাচক কারণে ব্যাটসম্যানদের চেয়ে নিশ্চিতভাবেই তারা বেশি পাবে।