রাত ২টায় ঘরে ফিরে ভোর ৫টায় আবার অনুশীলনে যান সরফরাজ

সরফরাজ খান ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ খেলেও জাতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছেন নাছবি: বিসিসিআই

ভারতের ক্রিকেটে সরফরাজ খান যেন দলছুট একটি নাম। ঘরোয়া ক্রিকেটে ম্যাচের পর ম্যাচে রান করেও জাতীয় দলে উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছেন এই ব্যাটসম্যান। বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফিতে তাঁকে দলে জায়গা না দেওয়ায় নির্বাচকদের সমালোচনা করছেন অনেকেই। সমালোচকদের তালিকায় আছেন সুনীল গাভাস্কারের মতো কিংবদন্তিও।

শারীরিক স্থূলতার অজুহাতে সরফরাজকে দলে না নেওয়ায় বিসিসিআইকে একহাতও নিয়েছিলেন গাভাস্কার। বলেছিলেন, একহারা গড়নের কাউকে খুঁজলে ফ্যাশন শো থেকে খেলোয়াড় বাছাই করে আনা উচিত ক্রিকেট বোর্ডের।

আরও পড়ুন

গাভাস্কারকে পাশে পেলেও নিজের ফিটনেস নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সরফরাজ। ক্রিকেটের প্রতি তাঁর নিবেদন এতটাই যে অনুশীলন থেকে রাত দুইটায় বাসায় এসে ভোর পাঁচটায় আবার অনুশীলনে চলে যান বলে জানিয়েছেন সরফরাজ।

রঞ্জি ট্রফিতে ব্যাট হাতে দারুণ আলো ছড়িয়েছেন। ৬ ম্যাচে তিন সেঞ্চুরিসহ রান করেছিলেন ৫৫৬। তবে এই পারফরম্যান্সও সফরাজের টেস্ট দলে জায়গা পাওয়ার জন্য যথেষ্ট হয়নি। তাঁকে উপেক্ষা করার কারণ হিসেবে বারবার সামনে আনা হয়েছে শারীরিক স্থূলতা। আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার জন্য সরফরাজ ফিট কি না, সে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।

অনুশীলনে নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন সরফরাজ
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

আইপিএল ২০২৩ সামনে রেখে সরফরাজ কথা বলেছেন নিজের ফিটনেস নিয়ে। গাভাস্কারের সেই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি ক্যাপিটালসের এই ক্রিকেটার বলেছেন, ‘দেখুন, ফিটনেস অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমি নিজের সর্বোচ্চটা চেষ্টা করে যাচ্ছি। যখন আমাদের রঞ্জি ট্রফির খেলা শেষ হয়ে যেত, আমি রাত দুইটায় বাসায় যেতাম। এরপর আবার ভোর পাঁচটায় মাঠে চলে যেতাম। তাই আমার গ্রাউন্ড ফিটনেস এবং দৌড় সব সময় ঠিকঠাক হতো। আমি রঞ্জি বা আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টগুলো থেকে সর্বোচ্চ পাওয়ার চেষ্টা করতাম। দিল্লি ক্যাপিটাল সম্প্রতি ১৪ দিনের একটি ফিটনেস ক্যাম্প পরিচালনা করেছে। হাতে সম্ভাব্য যেসব উপায় আছে সব কাজে লাগানোর চেষ্টা করি।’

আরও পড়ুন

ভারত দলে জায়গা না পেলেও হতাশ হতে চান না সরফরাজ। নিজের সময়ের জন্য অপেক্ষা করবেন বলে জানান এই ব্যাটসম্যান, ‘বর্তমানে যে ছন্দ আছে, সেটি ধরে রাখায় মনোযোগ দিচ্ছি। নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি যে, যত লম্বা সময় পর্যন্ত এটি ধরে রাখা যায়। আমি এটা করছি কারণ ছন্দ একবার হারালে, তা সহজে ফেরে না। প্রায়ই এটা হয় যে একজন খেলোয়াড় দেরিতে ডাক পায়। সূর্যকুমার যাদবের কথা বলা যায়। সে আমার দারুণ বন্ধু। সেও দেরিতে ডাক পেয়েছিল। তাই আমিও আরেকটু অপেক্ষা করতে চাইব। যেটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হচ্ছে ছন্দটা ধরে রাখা।’

আরও পড়ুন

এর আগে সরফরাজের দলে জায়গা না পাওয়া নিয়ে গাভাস্কার বলেছিলেন, ‘আপনি যদি ছিপছিপে ও একহারা গড়নের কাউকে খোঁজেন, তাহলে আপনার উচিত ফ্যাশন শোতে গিয়ে সেখান থেকে কাউকে খুঁজে আনা। এরপর তার হাতে ব্যাট বল তুলে দিয়ে উন্নতি করা। ক্রিকেট এভাবে হয় না। আপনার সব গড়ন এবং উচ্চতার খেলোয়াড় আছে। আকৃতি দিয়ে বিবেচনা করবেন না। বিবেচনা করুন রান ও উইকেট দিয়ে। সেঞ্চুরি করার পর সে বাইরে বসে থাকে না। সে আবার মাঠে ফিরে আসে।’