সৌম্যকে নিয়ে হাথুরু, ‘ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট’

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির পর সৌম্যএএফপি

সৌম্য সরকার কেন নিউজিল্যান্ড সফরের দলে—প্রশ্নটি যেন বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনের সব জায়গায়তেই ঘুরে বেড়াচ্ছিল। দেশের সাধারণ ক্রিকেট অনুরাগী থেকে শুরু করে ক্রিকেট–পণ্ডিত—সবাই সৌম্যকে নিউজিল্যান্ড সফরের দলে রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রশ্নটা আরও বেশি করে ওঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে বোলিংয়ে ৬৩ রান দিয়ে কোনো উইকেট না পাওয়া এবং ব্যাট হাতে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর।

তবে সব প্রশ্নের উত্তর সৌম্য পরের ম্যাচেই দিয়েছেন ব্যাট হাতে। নেলসনে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে হারলেও তিন সংস্করণ মিলিয়ে সৌম্য খেলেছিলেন তাঁর ক্যারিয়ার-সেরা ইনিংস। ইনিংস ওপেন করতে নেমে সেই ম্যাচে ২২ চার ও ২ ছয়ে ১৫১ বলে করেন ১৬৯ রান। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জয়ের ম্যাচে চোখের সমস্যার কারণে আহত অবসর নেওয়ার আগে সৌম্য করেন ৪ রান। ব্যাটিংয়ে নামার আগে বল হাতে ১৮ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট।

আরও পড়ুন
সৌম্য সরকার
এএফপি

ওয়ানডে সিরিজ শেষে আগামীকাল নেপিয়ারে বাংলাদেশ দল ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি খেলতে নামবে। টানা দুই ওয়ানডেতে ব্যাটে-বলে ভালো করা সৌম্য টি-টোয়েন্টিতেও যে খেলবেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু তাঁকে নিয়ে আলোচনা থামছে না। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে আজ নিউজিল্যান্ডে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল সৌম্যকে নিয়ে। এবার অবশ্য সৌম্যকে নিয়ে আলোচনাটা ইতিবাচকই।

সৌম্যর পারফরম্যান্স নিয়ে কোচের ভাবনা জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকেরা। হাথুরু বলেছেন, ‘সে যেভাবে পারফর্ম করেছে, আমি খুশি। আমি জানতাম, সে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো ইনিংস খেলার সামর্থ্য রাখে। সে এটা করে দেখিয়েছে। আমরা সবাই বলি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট (জাত চিরন্তন)। ফর্ম অনেক কিছুর কারণেই প্রভাবিত হয়। বিশেষ করে আপনার মাথায় কী চলছে, সেটাও একটা বিষয়।’ হাথুরু এরপর যোগ করেন, ‘আপনার মাথা যদি পরিষ্কার থাকে, আপনি যদি আপনার ভূমিকা বুঝতে পারেন, পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারলে প্রত্যেক খেলোয়াড়ই তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারে। তার মাথাটা একেবারে পরিষ্কার।’

আরও পড়ুন
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ছবিটা পুরোনো
ছবি: আইসিসি

সৌম্যর নিজেকে ফিরে পাওয়ায় হাথুরুর অবদান কতটা, এমন এক প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের কোচ বলেন, ‘আমি নই, সে নিজেই নিজেকে ফিরিয়েছে। দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে এটা সৌম্যর জন্য ছিল “হয় মারো, না হয় মরো”। এটাই প্রমাণ করে, সে মানসিকভাবে কতটা শক্তিশালী। সে জানত, পুরো দেশ তার বিপক্ষে ছিল। সে যদি ব্যর্থ হতো, তাহলে কী হতো, সেটা আমরা জানি না। আমরা যে কাজটা ভালো করেছি, আমরা তার ওপর বিশ্বাস রেখেছি, তাকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছি এবং পুরো দল তাকে সমর্থন দিয়েছে। এতেই মনে হয়, সে ফর্ম ফিরে পেয়েছে।’

ছন্দহীনতার কারণে ভারতে হয়ে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলা হয়নি সৌম্যর। নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডের পর যদি টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ভালো করেন, তাহলে আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে এ সংস্করণের বিশ্বকাপের দলে কি থাকবেন সৌম্য? এই প্রশ্নের উত্তর হাথুরু দিয়েছেন এভাবে, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তার পারফর্ম করতে না পারার মতো কোনো কারণ নেই।’

আরও পড়ুন