বাবরের অধিনায়কত্বের ভবিষ্যৎ ঠিক করবেন কারা, জানালেন পিসিবির প্রধান
অধিনায়ক বাবরের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেকের। বিভিন্ন সময় পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররাও বাবরের অধিনায়কত্ব নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তবে এবারের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের টানা ম্যাচ হারের পর বাবরের অধিনায়কত্ব নিয়ে সমালোচনা যেন তুঙ্গে উঠেছে।
এমনকি বিশ্বকাপের পর তাঁর নেতৃত্ব হারানোর জোর গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। এবার বাবরের অধিনায়কত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে মুখ খুলেছেন পিসিবির ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি জাকা আশরাফ। বাবরের অধিনায়কত্ব থাকা না–থাকা কারা নির্ধারণ করবেন, সেটিও জানিয়েছেন তিনি।
টানা দুই ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপ দারুণভাবে শুরু করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু এরপরই আশ্চর্যপতন দেখা যায় দলটির। টানা চার ম্যাচ হেরে রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে পড়ে দলটি। সে সময় বাবরের ওপর সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। তবে ব্যাটসম্যান বাবরের যত না সমালোচনা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি হয়েছে অধিনায়ক বাবরের। এমনকি বিশ্বকাপের পর বাবরকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর দাবিও করেছেন অনেকে।
বাবরের নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ কীভাবে নির্ধারিত হবে, তা নিয়ে পিসিবি সভাপতি জাকা আশরাফ বলেছেন, ‘এটা আমার সিদ্ধান্ত নয়। একটি পূর্ণাঙ্গ টেকনিক্যাল কমিটি আছে, যেখানে মিসবাহ–উল–হক এবং হাফিজও আছেন। তাঁদের পরামর্শ নিয়েই আমরা সামনে এগিয়ে যাব। এটা সভাপতির একার সিদ্ধান্ত নয়। টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ যাঁরা ক্রিকেটারও, তাঁদের পরামর্শ নিয়েই আমরা এগিয়ে যাব।’
বাবরের নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত অন্যদের হাতে তুলে দিলেও অধিনায়কের বেশ প্রশংসাও করেছেন জাকা আশরাফ। এমনকি বাবরের হাত ধরে পাকিস্তানের সাফল্যের প্রত্যাশাও করেছেন তিনি, ‘বাবর আজম একজন অসাধারণ অধিনায়ক এবং খুবই ভালো খেলোয়াড়। আমার প্রার্থনা থাকবে সে যেন সফল হয় এবং পাকিস্তানের জন্য ট্রফি নিয়ে আসে।’
এর আগে অধিনায়ক বাবরের সমালোচনায় ব্যাপকভাবে সরব হয়েছিলেন সাবেক ক্রিকেটাররা। ভারতের বিপক্ষে হারের পর পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শোয়েব মালিক বলেছিলেন, ‘বিশ্বকাপে পাকিস্তান বড় ব্যবধানে ভারতের কাছে হেরেছে বলেই বলছি না; আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, বাবর আজমের অধিনায়কত্ব করা উচিত নয়। আমি মনে করি, অধিনায়ক হিসেবে বাবর কখনোই গতানুগতিকের বাইরে গিয়ে ভাবতে পারে না।’
আরেক সাবেক অধিনায়ক মঈন খান সমালোচনা করেছিলেন এভাবে, ‘গত চার বছরে চারটা বড় টুর্নামেন্টে অধিনায়কত্ব করেছে। দেখে মনে হচ্ছে না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাবর শিখছে। যখন উইকেট দরকার, তখন ফিল্ডারদের সে আরও কাছে নিয়ে আসে না। অধিনায়ক হিসেবে তো এটুকু কৌশল আপনার থাকতে হবে।’
আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারের পর বাবরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে সাবেক অধিনায়ক শাহীদ আফ্রিদি বলেছিলেন, ‘অধিনায়কত্ব সম্মানের ব্যাপার। কিন্তু সেটা ফুলের বিছানাও নয়। যখন সব ঠিকঠাক হয়, তখন প্রশংসা যেমন অধিনায়ক পান, আর না হলেও তখন সব দায় অধিনায়ক ও কোচকে নিতে হয়।’
এই সমালোচনার ধাক্কা অবশ্য বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে কিছুটা সামলে উঠেছেন বাবর। এমনকি বিদায়ের দ্বারপ্রান্ত থেকে ঘুরে দাঁড়ানোয় বেঁচে আছে সেমিফাইনালের সম্ভাবনাও। তবে পাকিস্তানের ভাগ্যে কী আছে, সেটি জানতে অপেক্ষা করতে হবে তাদের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত।
১১ নভেম্বর কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ও তলানির দল ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। সেই ম্যাচে পাকিস্তানের করণীয় অবশ্য এর আগে হয়ে যাওয়া নিউজিল্যান্ড–শ্রীলঙ্কা ম্যাচেই নির্ধারিত হবে।