‘অবিক্রীত’ মুশফিক–মাহমুদউল্লাহকে আরও বেশি টাকায় কিনতে চেয়েছিল রাজশাহী–রংপুর

মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহপ্রথম আলো

বিপিএল নিলামে ‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটাগরিতে খেলোয়াড় ছিলেন ১৪ জন। প্রতিটি দলের জন্য এখান থেকে দুজন খেলোয়াড় নেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। ৬ দল দুজন করে ১২ জন কিনে ফেলার পর বাকি ছিল দুজন। সেই দুজনই মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ।

দুজনের কেউই এখন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেন না। কিন্তু মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর মতো দুই ক্রিকেটারের বিপিএলে নিলামে দল না পাওয়ার ঘটনা অনেককেই বিস্মিত করে। নিলামকারী মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর নাম ডাকছেন, কিন্তু ৬ দলের কেউ সাড়া না দেওয়ায় ‘আন সোল্ড’ বা অবিক্রীত থেকে গেছেন—এমন দৃশ্য বিস্ময়ের বৈকি।

শেষ পর্যন্ত দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অবশ্য দল পেয়েছেন। মুশফিক রাজশাহী ওয়ারিয়র্সে, মাহমুদউল্লাহ রংপুর রাইডার্সে। নিলামের পর দুটি দলের কোচই বলেছেন, এই ক্রিকেটারদের দলে পেয়ে নিজেদের ভাগ্যবান মনে করছেন তাঁরা।

নিয়ম অনুযায়ী ‘অবিক্রীত’ খেলোয়াড়ের নাম পরে আবার ডাকা হয়, তখন তাঁর ক্যাটাগরি এক ধাপ নেমে যায়। মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ছিলেন, যার ভিত্তিমূল্য ৩৫ লাখ টাকা। তাঁদের পরেরবার ডাকলে ‘সি’ ক্যাটাগরি হওয়ার কথা, যার ভিত্তিমূল্য ২২ লাখ টাকা।

সর্বশেষে বিপিএল ফরচুন বরিশালে খেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ–মুশফিক
প্রথম আলো

তবে বিসিবি পরিচালক ইশতিয়াক সাদেকের প্রস্তাবে দুজনকে আবারও ‘বি’ ক্যাটাগরিতেই তোলা হয়। তখন মুশফিকের জন্য রাজশাহী আর মাহমুদউল্লাহর জন্য রংপুর ছাড়া অন্য কোনো দল বিড না করলে ভিত্তিমূল্যেই বিক্রি হন দুই ক্রিকেটার।

নিলামের পর বাংলাদেশ দলের দুই সাবেক অধিনায়কের শুরুতে অবিক্রীত থেকে যাওয়া পরে বিক্রি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন রাজশাহীর কোচ হান্নান সরকার ও রংপুরের সহকারী কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল।

আরও পড়ুন

হান্নান জানান, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহকে প্রথমে কেউ না কেনায় তিনি নিজেও অবাক হয়েছিলেন, ‘আমারও একটা সময় খারাপ লেগেছে যে এটা আসলে কীভাবে সম্ভব। ওরা দল পাবে না, এটা আসলে মেনে নেওয়ার মতো নয়। টিম কম্বিনেশন বা ‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটাগরি থেকে দুজন প্লেয়ার নেওয়ার যে নিয়ম করেছে, সে কারণেই হয়তো কোনো কোনো দল ভিন্ন কৌশলে দল সাজিয়েছিল। যে কারণে প্রথমে তাদের কেউ নেয়নি। তবে আমরা দুটি দল অপেক্ষা করছিলাম (কখন আবার ডাকবে)। রংপুরের সঙ্গে কথা হচ্ছিল যে তারা আসলে (এ বিষয়ে) কী ভাবছে।’

নিলাম অনুষ্ঠানে রাজশাহী ওয়ারিয়রস
বিসিবি

স্থানীয় খেলোয়াড়দের দলে টানার নির্ধারিত কোটা শেষে বাড়তি খেলোয়াড় নেওয়ার পর্বে যখন মুশফিক ও মাহমুদউল্লার নাম ডাকা হয়, একডাকেই রাজশাহী মুশফিককে, রংপুর মাহমুদউল্লাহকে পেয়ে যায়। হান্নান জানিয়েছেন, মুশফিকের জন্য ৩৫ লাখ টাকার বেশিই ভেবে রেখেছিল তাঁর দল, ‘আমি মুশফিকের জন্য আরও বেশি টাকা রেখে দিয়েছিলাম। ভাবনা ছিল মুশফিককে আমি নেবই। আমাদের কিপিং অপশনে আকবর আলী আছে। মুশফিকের মতো আরেকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ।’

রংপুরের টিম ডিরেক্টর শাহনিয়ান তানিমও মনে করেন, মাহমুদউল্লাহকে তাঁরা কম দামেই পেয়ে গেছেন, ‘(দল না পাওয়া) আমাদের বিস্মিত করেছে। তবে রয়ে যাওয়ার পর আমরা নেওয়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। সৌভাগ্যবান যে ভিত্তিমূল্যে পেয়েছি। তিনি আরও বেশি ডিজার্ভ করেন।’

রংপুরের সহকারী কোচ আশরাফুলও মাহমুদউল্লাহকে পাওয়ায় খুশি, ‘মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর মতো বাংলাদেশের বড় দুজন সুপারস্টার আমাদের পরিকল্পনায় ছিল। শেষ মুহূর্তে যেহেতু পেয়েছি, আমরা নিজেদের ভাগ্যবানই মনে করছি।’