রোহিত শর্মা দল থেকে বাদ পড়েননি, কিন্তু অধিনায়কত্ব হারিয়ে ফেলেছেন। অনেকটা আচমকাই তাঁকে সরিয়ে ভারতের ওয়ানডে অধিনায়ক করা হয়েছে শুবমান গিলকে। গত মে মাসে এই গিলই পেয়েছেন টেস্টের অধিনায়কত্ব। এ ছাড়া সম্প্রতি শেষ হওয়া এশিয়া কাপে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়ক ছিলেন তিনি।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ কাইফের মতে, একের পর এক সংস্করণের নেতৃত্ব তুলে দিয়ে গিলের কাঁধে বোঝা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গিল অধিনায়কত্ব চাননি, বরং অজিত আগারকারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটিই তাঁর ওপর চাপিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ কাইফের।
টেস্টে রোহিত অবসর নেওয়ার পর গিলকে দায়িত্ব দেওয়ায় খুব বেশি আলোচনা হয়নি। কাউকে দায়িত্ব দিতেই হতো, সেরা বিকল্প ছিলেন গিলই। তবে সম্প্রতি ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফরের ওয়ানডে দলে গিলকে অধিনায়ক করার পর ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। রোহিত ভারতকে সর্বশেষ নেতৃত্ব দিয়েছেন মার্চে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। সে আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত।
এবার অস্ট্রেলিয়া সফরে তাঁকে দলে রাখা হলেও কেড়ে নেওয়া হয়েছে অধিনায়কত্ব। বিপরীতে ২৬ বছর বয়সী গিলের কাঁধে একের পর এক দায়িত্ব বাড়ানো হচ্ছে। টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়ক করার অর্থ আগামী বছরের বিশ্বকাপের পর সূর্যকুমার যাদব বিদায় নিলে সেখানেও তাঁকেই নেতৃত্ব দেওয়া হবে।
ভারতের হয়ে ১৩ টেস্ট আর ১২৫ ওয়ানডে খেলা কাইফ এ বিষয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলেছেন, ‘(গিলের অধিনায়ক হওয়াটা ) প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু আমি ভেবেছিলাম এটা ২০২৭ বিশ্বকাপের পর হবে। ছেলেটার গুণ আছে, সে নিজের ফিটনেস নিয়েও কাজ করেছে। ২০২৭ বিশ্বকাপে খেলার বাস্তব সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু এখন সব বোঝা গিলের ওপর পড়ছে। খুব তাড়াতাড়ি সবকিছু পাচ্ছে। এতে ক্ষতির সম্ভাবনাও আছে। এত অল্প সময়ে এত কিছু পেলে, সেটা বুমেরাং হতে পারে।’
গিলের ওপর তাড়াহুড়ো করে অতিরিক্ত চাপ দিতে মানা করে তিনি আরও বলেন, ‘একজন খেলোয়াড় কখনো অধিনায়কত্ব চায় না। সবাই জানে, ও নিজে এটা চায়নি। অধিনায়কত্ব দাবি করা যায় না, কিন্তু সবাই ওকে খুব পছন্দ করে এবং ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসেবে দেখে। অজিত আগারকারসহ নির্বাচকেরা তাকে চাপ দিয়েছে।’
গিলকে অধিনায়ক বানিয়ে রোহিতকে পদাবনতি দেওয়ার একটি ক্ষতিকর দিকও দেখছেন কাইফ। তাঁর মতে, ৩৮ বছর বয়সী রোহিতের কাছ থেকে অধিনায়কত্ব ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। যা তার খেলায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, ‘রোহিত একজন দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান। অসাধারণ নেতা। অধিনায়ক হিসেবে তার রেকর্ড আরও ভালো হতে পারত। যখন অধিনায়কত্ব ছিনিয়ে নেওয়া হয়, আমি মনে করি একজন খেলোয়াড় তার মূল শক্তিটা হারিয়ে ফেলে। রোহিত প্রতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করে না, কিন্তু বড় ম্যাচে রান করে, যেমন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে ৭৬ করেছিল। এখন তাকে ম্যাচ ধরে ধরে, সিরিজ ধরে ধরে বিচার করা হবে। মাঠ তো সবার জন্যই সমান। আমি জানি না সে আদৌ এখন খেলতে চায় কি না।’
আগামী ১৯ অক্টোবর পার্থে শুরু হবে অস্ট্রেলিয়া-ভারত তিন ওয়ানডের সিরিজ। যে সিরিজে গিলের নেতৃত্বে খেলার কথা রোহিতের।