ক্রিকেট এখন উত্তেজনার প্রতীক, প্রচারণার হাতিয়ার: ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে আথারটন

সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইক আথারটনএক্স

এশিয়া কাপে ভারত ও পাকিস্তান মুখোমুখি হয়েছিল তিনবার, যার একটি ছিল ফাইনাল। পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা ও পরবর্তী সময়ে ভারত–পাকিস্তান সংঘাতের জেরে এই তিন ম্যাচের কোনোটিতেই পাকিস্তানের অধিনায়ক আগা সালমানের সঙ্গে হাত মেলাননি ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব।

মূলত প্রথম ম্যাচে হাত না মেলানোকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক চলেছে টুর্নামেন্টের শেষ পর্যন্ত। এমনকি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভীর কাছ থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় শেষ পর্যন্ত ট্রফি ছাড়াই উদ্‌যাপন করতে হয়েছে ভারতকে।

ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে এসব বিতর্কিত ঘটনায় ক্রিকেট কলংকিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন অনেকে। এবার এই দুই দলের ম্যাচ নিয়ে মুখ খুলেছেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল আথারটন।

আরও পড়ুন

তাঁর মতে, ভারত–পাকিস্তানকে প্রতিটি আইসিসি টুর্নামেন্টে মুখোমুখি করার জন্য যেভাবে সূচি তৈরি করা হয়, তা আর চলতে দেওয়া উচিত নয়। এশিয়া কাপে দুই দলের লড়াই ঘিরে তৈরি হওয়া শত্রুতা ও বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতেই এ মন্তব্য করেছেন তিনি।

এবারের এশিয়া কাপে টসের সময় একবারও হাত মেলাননি ভারত ও পাকিস্তান অধিনায়ক
এসিসি

যুক্তরাজ্যের দ্য টাইমস পত্রিকায় লেখা কলামে আথারটন স্বীকার করেছেন, ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ নিশ্চিত করার পেছনে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক দুই ধরনের কারণই আছে। ২০১৩ সালের পর থেকে যতগুলো আইসিসি টুর্নামেন্ট হয়েছে, প্রতিটিতেই গ্রুপ পর্বে এই দুই দল মুখোমুখি হয়েছে।

আথারটন লিখেছেন, ‘এটি বিরল লড়াই হলেও (হয়তো আংশিকভাবে এটি বিরলই) এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিপুল। এ কারণেই আইসিসি টুর্নামেন্টের সম্প্রচারস্বত্ব এত দামে বিক্রি হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৩–২৭ চক্রে যা ছিল প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার। দ্বিপক্ষীয় সিরিজের মূল্য কমে যাওয়ায় আইসিসি টুর্নামেন্টের গুরুত্ব বেড়েছে, আর এই ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ সেই আয়-ব্যয়ের হিসাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

আরও পড়ুন

অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ার পরও সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মনে করেন, এশিয়া কাপে যা ঘটেছে তারপর এই ‘অঘোষিত সমঝোতা’ শেষ করার সময় এসেছে। আথারটন লেখেন, ‘একসময় ক্রিকেট ছিল কূটনীতির বাহন। এখন এটি স্পষ্টতই বিস্তৃত উত্তেজনার প্রতীক ও প্রচারণার হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। গুরুত্বপূর্ণ একটি খেলা তার আর্থিক স্বার্থে এভাবে সূচি সাজাবে, এর কোনো যৌক্তিকতা নেই। আর এখন যখন এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে নেতিবাচকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তখন তো আরও কোনো যৌক্তিকতা থাকে না।’

টসের পর ভারত ও পাকিস্তান অধিনায়ক সচেতনভাবে একে অপরকে এড়িয়ে গেছেন
এএফপি

আথারটন আরও যোগ করেন, ‘আগামী সম্প্রচারস্বত্বের চক্র থেকে টুর্নামেন্টের ফিক্সচার আরও স্বচ্ছভাবে করা উচিত। ভারত–পাকিস্তান যদি প্রতিবার মুখোমুখি না-ও হয়, তাতেই বা সমস্যা কোথায়।’