ম্যাচপ্রতি সাড়ে ৪ কোটি দেবে ভারত ক্রিকেট দলের নতুন স্পনসর
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সঙ্গে আড়াই বছরের চুক্তি করেছে অ্যাপোলো টায়ার্স। প্রধান স্পনসর হিসেবে তারা বিসিসিআইকে ৫৭৯ কোটি রুপি দেবে।
অপেক্ষার পালা শেষ। নতুন স্পনসর পেয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। আজ তারা জানিয়েছে, ভারতীয় ক্রিকেট দলের নতুন প্রধান স্পনসর হয়েছে অ্যাপোলো টায়ার্স।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, হরিয়ানাভিত্তিক বহুজাতিক এই টায়ার উৎপাদনকারী কোম্পানি প্রতি ম্যাচে সাড়ে ৪ কোটি রুপি দেবে, যা আগের স্পনসর ড্রিম১১–এর চেয়ে ৫০ লাখ রুপি বেশি। ড্রিম১১ ম্যাচপ্রতি বিসিসিআইকে ৪ কোটি রুপি দিত।
অ্যাপোলো টায়ার্সের সঙ্গে আড়াই বছরের চুক্তি করেছে বিসিসিআই। চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৮ সালের মার্চে। এই সময় পর্যন্ত ভারতীয় দল দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ১২১টি ও আইসিসির প্রতিযোগিতায় কমপক্ষে ২১টি ম্যাচ খেলবে।
ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ জানতে পেরেছে, সফটওয়্যার কোম্পানি ক্যানভা ও টায়ার-টিউব উৎপাদনকারী কোম্পানি জে কে টায়ার্সও ভারতীয় দলের মূল স্পনসর হতে দরপত্র জমা দিয়েছিল। তবে দর কষাকষিতে তারা অ্যাপোলো টায়ার্সের সঙ্গে পেরে ওঠেনি।
অ্যাপোলো টায়ার্স বিসিসিআইকে দেবে ৫৭৯ কোটি রুপি। ক্যানভা ও জে কে টায়ার্স দিতে চেয়েছিল যথাক্রমে ৫৪৪ কোটি ও ৪৭৭ কোটি রুপি।
এ ছাড়া রং উৎপাদনকারী কোম্পানি বিরলা অপাস পেইন্টসও বিনিয়োগে আগ্রহী ছিল। তবে তারা দরপত্রপ্রক্রিয়ায় অংশ নেয়নি।
স্পনসর না থাকায় চলমান এশিয়া কাপে জার্সির বুকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের লোগো ছাড়াই খেলছে সূর্যকুমার যাদবের দল। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান ওয়ানডে সিরিজেও ভারত নারী দলের জার্সিতে শুধু দেশের নাম দেখা যাচ্ছে।
গত আগস্টে ভারতে অনলাইন গেমিং বিল অনুমোদন করা হয়। দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সেই বিলে সই করলে অনলাইন মানি গেমিং (টাকা পরিশোধ করে খেলা) নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এতে ড্রিম১১ আর্থিকভাবে বড় ধাক্কা খায়। তাই ২০২৬ সাল পর্যন্ত মেয়াদ থাকলেও তারা বিসিসিআইয়ের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হয়।
নতুন পৃষ্ঠপোষক বেছে নিতে এ মাসের শুরুতে দরপত্র আহ্বান করে বিসিসিআই। আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অফেরতযোগ্য ৫ লাখ রুপি দিয়ে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়। আর বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৫ হাজার ৬৭৫ ডলার দিয়ে আবেদনপত্র নিতে বলা হয়।
দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন আজ। তবে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন করে আর কোনো প্রতিষ্ঠান ভারতীয় দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হতে আগ্রহ দেখায়নি।
ড্রিম১১–কে চুক্তি থেকে সরে যেতে হওয়ায় নতুন প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিসিসিআই এবার বেশ সতর্ক ছিল। বোর্ড স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, মদ বা অ্যালকোহল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান, বাজি বা জুয়ার সাইট, ক্রিপ্টোকারেন্সি (ভার্চ্যুয়াল মুদ্রা), অনলাইন মানি গেমিং, তামাকজাত পণ্য কিংবা জনসমাজের নৈতিকতাকে আঘাত করতে পারে (যেমন পর্নোগ্রাফি)—এমন কোনো প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারবে না।
চুক্তির মাঝপথে মূল পৃষ্ঠপোষকের সরে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বিসিসিআইয়ের জন্য নতুন কিছু নয়। এর আগে চায়নিজ মুঠোফোন কোম্পানি অপো ২০১৯ সালে চুক্তির মেয়াদ তিন বছর বাকি থাকতেই সরে যায়।