মাঠে কিংবদন্তি, খাবারের টেবিলে শিশু—শেন ওয়ার্নের অদ্ভুত খাদ্যাভ্যাস
প্রয়াত কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্ন ক্রিকেট মাঠে কীভাবে ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করতেন, সেই গল্প সবার জানা। একইভাবে কিছু অদ্ভুত কাণ্ড করে খাওয়াদাওয়ার টেবিলেও তিনি নাকি চমকে দিতেন, জানিয়েছেন শেন ওয়ার্নের ছেলে জ্যাকসন ওয়ার্ন।
ওয়ার্নের খাদ্যাভ্যাস ছিল আশ্চর্য রকমের সরল ও শিশুসুলভ। তিনি প্রায়ই বলতেন, জীবনে কখনো সবজি খাননি, বেশির ভাগ ফলও এড়িয়ে চলতেন। তাঁর পছন্দের খাবারের তালিকায় ছিল পিৎজা, পাস্তা, বেকন স্যান্ডউইচ ইত্যাদি। বিশেষ করে স্প্যাগেটি বোলোনিজ ছিল তাঁর ভীষণ প্রিয় এবং তাতে থাকতে হবে অতিরিক্ত চিজ! আর সালাদ? স্প্যাগেটি বোলোনিজে এর ছিটেফোঁটাও থাকতে পারবে না।
মিষ্টির প্রতি ওয়ার্নের দুর্বলতা ছিল ভীষণ। আইসক্রিম, ললিসের জন্য পাগল ছিলেন। এ ছাড়া টোস্টের ওপর বেকড বিনসও ওয়ার্নের পছন্দের ছিল। একবার ভারত সফরে গিয়ে তিনি স্থানীয় খাবারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে নিজের জন্য ক্যানভর্তি বেকড বিনস অস্ট্রেলিয়া থেকে আনিয়েছিলেন।
সামুদ্রিক খাবার ওয়ার্ন একেবারেই পছন্দ করতেন না। মাছের গন্ধ ও গঠন কোনোটাই তাঁর সহ্য হয় না। বন্ধুরা মজা করে বলতেন, ওয়ার্নের খাদ্যতালিকা নাকি কিশোর বয়সী কারও সঙ্গে বেশি মানানসই, পেশাদার ক্রীড়াবিদের সঙ্গে নয়।
এসব জানা গেল ওয়ার্নের ছেলে জ্যাকসনের মাধ্যমেও। ‘লাইফ অব ব্রায়ান’ পডকাস্টে তিনি জানিয়েছেন, ‘আপনি নোবু (জাপানি রেস্তোরাঁ) বা ক্রাউনের রকপুল চেনেন তো? বহুবার সেখানে বাবার গুরুত্বপূর্ণ মিটিং বা কারও সঙ্গে ডিনারের আয়োজন থাকত। তিনি জানতেন, মেনুর কিছুই খাবেন না। স্টেক, মাছ বা অয়েস্টার সবই তাঁর অপছন্দ। তাই ৪০ মিনিট পর দেখা যেত, গ্রাদি থেকে পিৎজা চলে এসেছে, আর বাবা সেই পিৎজা খাচ্ছেন রেস্তোরাঁর ভেতরেই।’
একবার নাকি এই কাণ্ডের জন্য ওয়ার্নকে রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। মেলবোর্নের এক নামী রেস্তোরাঁয় মিডিয়া ও ক্রিকেট ধারাভাষ্যকারদের সঙ্গে ডিনারে গিয়ে তিনি ওয়েটারের কাছে বলেছিলেন, “না ধন্যবাদ ভাই, আমার কিছু লাগবে না।” কিছুক্ষণ পরই ডেলিভারিম্যান অর্ডার নিয়ে হাজির, আর ওয়ার্ন শুরু করলেন নিজের পিৎজা খাওয়া। প্রধান ওয়েটার এসে বিনয়ের সঙ্গে বললেন, “মিস্টার ওয়ার্ন, দুঃখিত, এখানে এটা খাওয়া যাবে না।” ওয়ার্ন হেসে বলেছিলেন, “আচ্ছা, ঠিক আছে।” তারপর পিৎজা নিয়ে বাইরে গিয়ে বেঞ্চে বসে খেলেন, আর ডেজার্ট হিসেবে ধরালেন এক সিগারেট।’
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার ব্রেট লিও জানিয়েছেন, ওয়ার্ন আসলেই এমন করতেন। ‘উইলো টক ক্রিকেট’ পডকাস্টে লি বলেছেন, ‘নোবুর মতো বিশ্বসেরা জাপানি রেস্তোরাঁয় গিয়ে তিনি মার্গারিটা পিৎজা অর্ডার করতেন। ওয়ার্ন শুধু বেকড বিনস, চিজ অন টোস্ট, লাসানিয়া, স্প্যাগেটি বোলোনিজ আর মার্গারিটা পিৎজা খেতেন। মনে হয় জীবনে একটাও সবজি খাননি।’