শততম টেস্টে মুশফিকের জন্য মিরপুরে থাকবে যে বিশেষ আয়োজন
সব মিলিয়ে মিনিট পনেরোর আনুষ্ঠানিকতা। তবে এই মিনিট পনেরোতে যা হবে, সেটাই আগে কখনো দেখেনি বাংলাদেশের ক্রিকেট। বাংলাদেশের কেউ যে এর আগে শততম টেস্টই খেলেননি!
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ শুরু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে সে চূড়ায় উঠে যাবেন মুশফিকুর রহিম। উপলক্ষটা উদ্যাপন করতে ম্যাচের আগে মাঠেই হবে সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিকতা।
মুশফিকের মাথায় বিশেষ টেস্ট ক্যাপ পরিয়ে দেবেন তাঁর প্রথম অধিনায়ক হাবিবুল বাশার, ২০০৫ সালের ২৬ মে লর্ডসে হাবিবুলের হাতেই মুশফিক পরেছিলেন প্রথম টেস্ট ক্যাপ। শততম টেস্টে তিনি এরপর আরেকটি বিশেষ টেস্ট ক্যাপ পরবেন বাংলাদেশের ১ নম্বর টেস্ট ক্রিকেটার আকরাম খানের কাছ থেকে।
বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান ও বিসিবির সভাপতি আমিনুল ইসলাম মুশফিককে উপহার দেবেন বিশেষ ক্রেস্ট। মুশফিক তাঁর প্রথম টেস্টের অধিনায়ক হাবিবুল ও শততম টেস্টের অধিনায়ক নাজমুল হোসেনের হাত থেকে নেবেন তাঁদের অটোগ্রাফ দেওয়া একটি জার্সিও। এরপর নাজমুল ও মুশফিকের বক্তৃতা শুনে এবং গ্রুপ ছবি তুলে মাঠে নেমে যাবেন ক্রিকেটাররা।
মুশফিকের জন্য শততম টেস্টের আসল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে তখনই। ২০ বছরের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে খেলাটার প্রতি যে শ্রম, আত্মনিবেদন আর সততা দেখিয়েছেন; সেসবেরই পুরস্কার ১০০ টেস্ট খেলতে পারা। এই টেস্টকে পারফরম্যান্সের রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার একটা বাসনা তো থাকতেই পারে তাঁর মনের কোণে।
বয়স ৩৮ হয়ে যাওয়ায় শততম টেস্টের উপলক্ষে একটা প্রশ্ন অবশ্য প্রাসঙ্গিক হয়েই যায়—ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিকে আগেই বিদায় বলা মুশফিককে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে দেখা যাবে আর কত দিন? কিন্তু বয়স তো কেবলই একটা সংখ্যা, পারফরম্যান্সই আসল। মাত্র চার ইনিংস আগে গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে সেটাই জানিয়ে দিয়েছেন মুশফিক। তাঁর ক্ষেত্রে ওই প্রশ্নটা তাই শততম টেস্টের উপলক্ষেও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়।
কাল বাংলাদেশ দলের কোচ ফিল সিমন্সও বলেছেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে মুশিকে বলেছিলাম—এখন তুমি যা করছ, সেটা উপভোগ করো। প্রতিটি দিন, প্রতিটি টেস্ট উপভোগ করো। কারণ, যত দিন তুমি পারফর্ম করবে, তত দিন তুমি নিজেই নির্ধারণ করবে কত দিন খেলবে। পারফরম্যান্সটাই সবচেয়ে জরুরি।’
সিমন্সের দৃষ্টিতে খেলার প্রতি আত্মনিবেদন আর পেশাদারত্বই আজ এই জায়গায় নিয়ে এসেছে মুশফিককে, ‘আসল রহস্য হলো পেশাদারত্ব। আপনি নিজেকে কীভাবে পরিচালনা করেন, কীভাবে নিজের দক্ষতা উন্নত করেন এবং কীভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফল হতে কাজ করেন। যদি আপনি তার ক্যারিয়ারের দিকে তাকান, সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সফল, আর এটাই তাকে এত দিন ধরে খেলিয়ে যাচ্ছে।’