সিলেট টেস্ট: মেন্ডিস-ডি সিলভা ৪৭৬, বাংলাদেশ ৩৭০

মুমিনুল যা একটু লড়াই করেছেনশামসুল হক
শ্রীলঙ্কা: ২৮০ ও ৪১৮; বাংলাদেশ: ১৮৮ ও ১৮২। শ্রীলঙ্কা ৩২৮ রানে জয়ী।

বাংলাদেশ দলের সিলেট টেস্টের ভাগ্যটা আগেই নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল। বাকি ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা। আজ চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশনে মধ্যেই বাংলাদেশকে অলআউট করে তা সেরেছে শ্রীলঙ্কা। চতুর্থ ইনিংসে শ্রীলঙ্কার ৫১১ রানের জবাবে ৪৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে আজ দিন শুরু করা বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৮২ রানে। মুমিনুল হক শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৮৭ রানে। তবে বৃথাই গেছে তাঁর লড়াই, শেষ পর্যন্ত ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। দুই ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে ৩৭০ রান, সেখানে দুবার জোড়া সেঞ্চুরি করা শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস মিলেই করেন ৪৭৬ রান। সিলেটে বড় জয়ে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা।

এর আগে সিলেট টেস্টের প্রথম দিন সবুজে মোড়ানো উইকেটে শ্রীলঙ্কাকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ৫৭ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিল বাংলাদেশ দল। এর পর থেকে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ডি সিলভা ও কামিন্দু। দুজনের শতকে ২৮০ রান করে ফেলে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ১৮৮ রানে প্রথম ইনিংসে থামে বাংলাদেশ। লঙ্কানদের দ্বিতীয় ইনিংসেও শতকের দেখা পেয়েছেন ডি সিলভা ও কামিন্দু। তাতে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১৮ রানের পাহাড় গড়ে লঙ্কানরা। আর বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫১১ রান।

তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে অসম্ভব এই লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ৩৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। সেখান থেকে মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলামের জুটি অপেক্ষায় রাখে শ্রীলঙ্কাকে। আজ চতুর্থ দিন সকালের সেশনের তাইজুলকে হারায় বাংলাদেশ। ১৬তম ওভারে কাসুন রাজিতার রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে করা বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন ১৫ বলে ৬ রান করা তাইজুল। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান রিভিউ নিলেও কাজে আসেনি সেটি। বাংলাদেশের রান তখন ৫১।

৮৭ রানে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল
প্রথম আলো

সেখান থেকে মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ পার করান মুমিনুল। মিরাজের সঙ্গে মুমিনুলের জুটিতে ১০৫ বলে আসে ৬৬ রান। মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ৫০ বলে ৩৩ রান, ৬টি চার ছিল তাঁর ইনিংসে। ৩৩তম ওভারে রাজিতার বলে অফ সাইডে ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলে থামেন মিরাজ। তাইজুল ও মিরাজ ফিরলেও এক প্রান্তে মুমিনুল টিকে থেকে বাংলাদেশের নিশ্চিত হার বিলম্বিত করেছেন। শেষ পর্যন্ত কমিয়েছেন হারের ব্যবধান।

আরও পড়ুন
৫ উইকেট নেন রাজিতা
প্রথম আলো

মধ্যাহ্নবিরতিতে মুমিনুলের সঙ্গী ছিলেন শরীফুল ইসলাম। দুজন মিলে ৮১ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের ৪৬তম ওভারে রাজিতার বলে শরীফুল ফিরতি ক্যাচ দিলে জুটি ভাঙে। আউট হওয়ার আগে ৪২ বলে ১২ রান যোগ করেন শরীফুল। ২ ও ১২ রানের সময় অবশ্য দুবার জীবনও পেয়েছেন। ঠিক পরের বলে ক্যাচ তোলেন খালেদ আহমেদও। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কট বিহাইন্ড হন তিনি। রাজিতার পঞ্চম উইকেট ছিল সেটি। টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট পেলেন রাজিতা, প্রথমটিও এসেছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। টেস্টে ১৭তম অর্ধশতকের পর দ্রুত রান তুলে আশির ঘরে পৌঁছে যান মুমিনুল, সঙ্গী থাকলে হয়তো শতকটাও পেয়ে যেতেন।

আরও পড়ুন

কিন্তু ৫০তম ওভারে লাহিরু কুমারা শেষ ব্যাটসম্যান নাহিদ রানাকে আউট করলে শতক করা হয়নি মুমিনুলের। অপরাজিত ৮৭ রানে থেমেছেন তিনি, বল খেলেছেন ১৪৮টি। ১২টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল মুমিনুলের ইনিংসে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শ্রীলঙ্কা: ২৮০ ও ৪১৮

বাংলাদেশ: ১৮৮ ও ৪৯.২ ওভারে ১৮২ (মুমিনুল ৮৭*, মিরাজ ৩৩, জাকির ১৯, শরীফুল ১২; রাজিতা ৩/৫৬, ফার্নান্ডো ৩/৩৬, কুমারা ২/৩৯)

ফল: শ্রীলঙ্কা ৩২৮ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা (শ্রীলঙ্কা)