ক্রিকেটের সেই বিরল বইয়ের দাম উঠল আড়াই কোটি টাকা
টি-টোয়েন্টির আবির্ভাব হয়েছে এই শতাব্দীতে, বিংশ শতাব্দীতে ওয়ানডে। আর টেস্ট ক্রিকেটের শুরুটা তারও আগে– উনিশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে, ১৮৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড মেলবোর্ন ম্যাচ দিয়ে। তবে ক্রিকেটের ইতিহাস এর চেয়েও পুরোনো। ক্রিকেট নিয়ে বইও লেখা হয়ে গিয়েছিল সেই আঠারো শতকেই।
ইংল্যান্ড থেকে প্রকাশিত এমনই এক ক্রিকেট–বিষয়ক বইয়ের নাম ‘ক্রিকেট আ কালেকশন অব অল দ্য গ্র্যান্ড ম্যাচেস অব ক্রিকেট প্লেইড ইন ইংল্যান্ড উইদিন টোয়েন্টি ইয়ার্স, ১৭৭১-১৭৯১’। ১৭৯৯ সালে প্রকাশিত বইটির একটি ছাপা কপি এখনো অক্ষত, যা বিক্রির জন্য বাজারে উন্মুক্তও করা হয়েছে।
এবার দুষ্প্রাপ্য সেই বইটি কেনার জন্য ব্রিটিশ লাইব্রেরিকে ১ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ড অনুদান দিয়েছেন এক ব্যক্তি, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ কোটি ৫১ লাখ টাকার বেশি। দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, লাইব্রেরিকে অনুদান দেওয়া ব্যক্তি তাঁর পরিচয় প্রকাশ করতে চান না।
ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেট ম্যাচ ও স্কোরকার্ড নিয়ে প্রকাশিত লিখেছিলেন উইলিয়াম এপস। ‘ভয়েস অব ক্রিকেট’ নামে পরিচিত কিংবদন্তি ধারাভাষ্যকার জন আরলট বইয়ের একটি কপি ১৯৫৯ সালে তাঁর বাবার কাছ থেকে পেয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে আরলট মারা গেলে তাঁর সংগৃহীত অন্যান্য বইয়ের সঙ্গে এটিও বিক্রি করে দেওয়া হয়, যা কিনে নেন আরলটের আত্মজীবনীর প্রকাশক। একপর্যায়ে বইটি লন্ডনের বিরল বইয়ের সংগ্রাহক ও বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান পিটার হারিংটনের হাতে পৌঁছায়।
গত এপ্রিলে পিটার হারিংটন জানান, ২ লাখ ২৫ হাজার পাউন্ড দামে এটি বিক্রি করে দেওয়া হবে। এই খবর শুনে এক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলে জানান এর মালিক পম হারিংটন, ‘এটা বিস্ময়ের ব্যাপার যে একজন দাতা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অর্থ অনুদান দিতে চাইলেন, যার পরিমাণ ১ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ড। তিনি চান বইটি ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে থাকুক।’ শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে নিজেদের চাওয়া দামের চেয়ে কমে ব্রিটিশ লাইব্রেরির কাছে এটি বিক্রি করতে প্রস্তুত বলে জানান পম।
ব্রিটিশ লাইব্রেরির ‘ছাপা ঐতিহ্য সংগ্রহ ১৬০১-১৯০০’-এর প্রধান কিউরেটর তানিয়া কার্ক দ্য টেলিগ্রাফকে জানান, ব্রিটিশ লাইব্রেরির ৫০তম বার্ষিকী উদ্যাপনের বছরে এমন একটি বই সংগ্রহের সুযোগ পেয়ে তাঁরা অভিভূত, ‘এ বই জনপ্রিয় একটি খেলার ইতিহাসের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত আর অবিশ্বাস্য বিরল বই–ই শুধু নয়, এটা ওই সময়ের আঞ্চলিক ছাপার নিদর্শনও বহন করছে। যেটা এখন পর্যন্ত কোনো গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের কাছেও নেই। ব্রিটিশ লাইব্রেরি বৃহৎ সম্প্রদায় এবং দাতাদের ওপর নির্ভর করে চলে। আমরা পরিচয় প্রকাশ না করা ওই দাতার মহানুভবতায় অশেষ কৃতজ্ঞ।’