ইসলামাবাদে আত্মঘাতী বোমা হামলার পর শ্রীলঙ্কা দলের সঙ্গে দেখা করলেন নাকভি
ইসলামাবাদের আদালত কমপ্লেক্সের বাইরে গতকাল আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১২ জন নিহত ও ২৭ জন আহত হয়েছেন। শ্রীলঙ্কা দল এ মুহূর্তে আছে ইসলামাবাদ থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরের শহর রাওয়ালপিন্ডিতে।
২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলকে বহনকারী বাসে সন্ত্রাসী হামলার পর টানা ৬ বছর পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ ছিল। যার জেরে আয়োজক হিসেবে অন্যদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে বেশ বেগই পেতে হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি)।
শ্রীলঙ্কা দল এই মুহূর্তে আবারও পাকিস্তান সফর করছে। ঠিক এমন সময়ে দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে ঘটে গেছে আরেকটি ভয়াবহ ঘটনা। গতকাল ইসলামাবাদের আদালত কমপ্লেক্সের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১২ জন নিহত ও ২৭ জন আহত হয়েছেন।
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল এই মুহূর্তে আছে ইসলামাবাদ থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের শহর রাওয়ালপিন্ডিতে। তাই এ হামলার ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই লঙ্কান দলের সদস্যদের মনে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তবে লঙ্কানদের ভয় দূর করেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান ও দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজের খবরে বলা হয়েছে, রাওয়ালপিন্ডিতে মঙ্গলবার প্রথম ওয়ানডে চলাকালে সফরকারী দলের সঙ্গে দেখা করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মহসিন নাকভি। রাষ্ট্রীয় অতিথিকে যে স্তরের নিরাপত্তা দেওয়া হয়, লঙ্কানদেরও সে রকম নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
পিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘মহসিন নাকভি নিজেই স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন এবং সফরকারী দলের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে নিশ্চিত করেছেন যে তাঁরা নিরাপদ এবং সুরক্ষিত থাকবেন।’
এ হামলায় আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে দোষারোপ করেছে পাকিস্তান। সরকারের দাবি, জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানজুড়ে নতুন করে হামলার পরিকল্পনা করছে।
গতকাল পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের ওয়ানা ক্যাডেট কলেজেও হামলার পরিকল্পনা ছিল টিটিপির। তবে তাদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী। ওয়ানা ক্যাডেট কলেজ থেকে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের তথ্য প্রতিমন্ত্রী আতা তারার বলেছেন, ‘যদি নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত পদক্ষেপ না নিত, তাহলে ২০১৮ সালে পেশোয়ারের স্কুলে হামলার মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারত।’
২০২২ সালে নিউজিল্যান্ড দল রাওয়ালপিন্ডিতে খেলার প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ে হামলার আশঙ্কায় শেষ মুহূর্তে সিরিজ বাতিল করে পাকিস্তান ছাড়ে।
পিসিবির সূত্র আরও জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কা দল যেন একমুহূর্তের জন্যও নিরাপত্তার শঙ্কায় না ভোগে, তাই দলটিকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা প্রদানে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী রেঞ্জার্সকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজ শেষ হবে ১৫ নভেম্বর। এরপর রাওয়ালপিন্ডি ও লাহোরে ১৭ থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ আয়োজন করবে পাকিস্তান।
এই সিরিজে আফগানিস্তানেরও খেলার কথা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি পাকিস্তানের বিমান হামলায় আফগানিস্তানের আরগুন জেলার তিন স্থানীয় ক্রিকেটার নিহত হওয়ার ঘটনায় সফর বাতিল করেছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি)। আফগানিস্তান সরে দাঁড়ানোয় ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলবে জিম্বাবুয়ে।