টি-টোয়েন্টির বিশ্ব রেকর্ডে ব্রাভোর পাশে রশিদ, এরপর কারা
ডোয়াইন ব্রাভোর সঙ্গে দেখা হলে রশিদ খান হেসে বলতে পারেন, ‘যে ‘‘চূড়া’’য় উঠতে আপনার লেগেছে ১৮ বছর, সেখানে আমার লাগল ১০ বছর। যেখানে ৫৮২টি “ধাপ” ফেলে আপনাকে উঠতে হয়েছে, সেটা আমি ছুঁয়ে ফেলেছি ৪৬০ “ধাপে”ই।’
ধাপ? সেটা আসলে টি-টোয়েন্টি ম্যাচসংখ্যা। চূড়া? টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেটসংখ্যা।
ব্যাপারটা এতক্ষণে নিশ্চয়ই ধরে ফেলেছেন। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এত দিন সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক ক্রিকেটার ব্রাভো। সেটি কাল রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ এসএ২০ তে রশিদ খান দ্বিতীয় উইকেট পাওয়ার আগ পর্যন্ত। ৪৫৯ ম্যাচে ৬২৯ উইকেট নিয়ে প্রিটোরিয়া ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলতে নেমেছিলেন এমআই কেপ টাউনের এ লেগ স্পিনার। প্রিটোরিয়া অধিনায়ক কাইল ভেরেইনাকে বোল্ড করে পেয়ে যান ৬৩০তম শিকার। ব্রাভোর চূড়া থেকে তখন আর একটি উইকেটের দূরত্ব। এরপর মারকুয়েস অ্যাকেরমানকে বোল্ড করে সেই চূড়ার দেখা পেয়ে যান রশিদ।
অর্থাৎ, স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি এখন দুজন—৬৩১ উইকেট নিয়ে সমানে সমান রশিদ ও ব্রাভো। তবে কিছু পার্থক্য তো আছেই। ব্রাভো ছিলেন পেসার। রশিদ স্পিনার। বল ব্রাভোর তুলনায় আস্তে করলেও উইকেট নেওয়ায় দ্রুততায় সাবেক ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারের চেয়ে এগিয়ে আফগানিস্তানের এই তারকা। ৪১ বছর বয়সী ব্রাভোর ১৮ বছরের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ৬৩১ উইকেট পেতে খেলতে হয়েছে ৫৮২ ম্যাচ। ২৬ বছর বয়সী রশিদ সেখানে মাত্র এক দশকের ক্যারিয়ারেই ৪৬০ ম্যাচে ব্রাভোকে ধরে ফেললেন। টপকেও যে যাবেন সেটাও নিশ্চিত। গত বছর সেপ্টেম্বরে সব ধরনের ক্রিকেট ছাড়েন ব্রাভো।
ব্রাভোর চেয়ে ৯০ ইনিংসে কম বোলিং করেছেন রশিদ। ৫৪৬ ইনিংসে বোলিং করেছেন ব্রাভো, রশিদ করেছেন ৪৫৬ ইনিংসে। স্বাভাবিকভাবে ওভারও কমই করেছেন রশিদ। ব্রাভো স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে করেছেন ১৮৬৩.৫ ওভার, রশিদ ১৭৫৬.৪। বোলিং গড়, ইকোনমি, স্ট্রাইক রেট ও ইনিংসে সেরা বোলিংয়েও ব্রাভোর চেয়ে ভালো অবস্থানে আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে ৮ম এই বোলার। শীর্ষ উইকেটশিকারির তালিকায় শীর্ষ পাঁচে আর কোনো বোলারের স্ট্রাইক রেটই রশিদের (১৬.৭) মতো ১৭ এর নিচে নয়। ব্রাভোর স্ট্রাইক রেট ১৭.৭। শীর্ষ পাঁচে বোলিং গড়েও আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক রশিদ (১৮.০৮) বাকিদের চেয়ে এগিয়ে। ব্রাভোর ২৪.৪০।
স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেটশিকারির তালিকায় বাংলাদেশের এক প্রতিনিধিও আছেন। ৪৪৪ ম্যাচে ৪৩৬ ইনিংসে বোলিং করে ৪৯২ উইকেট নিয়ে তালিকার পাঁচে সাকিব আল হাসান। ৪২৮ ম্যাচে ৫৩১ উইকেট নিয়ে চারে দক্ষিণ আফ্রিকার লেগ স্পিনার ইমরান তাহির। ৫৩৪ ম্যাচে ৫৭৩ উইকেট নিয়ে তৃতীয় ক্যারিবিয়ান স্পিনার সুনীল নারাইন। ব্রাভো ও রশিদের উইকেটসংখ্যা সমান হলেও ব্রাভো অবসর নেওয়ায় দুইয়ে নেমে পড়তে যাচ্ছেন। তবে রশিদ আরেকটি উইকেট না পাওয়া পর্যন্ত যুগ্মভাবে ব্রাভোও সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। তবে শীর্ষ পাঁচে ব্রাভো একটি জায়গায় আলাদা কিংবা একা। বাকি চারজনই স্পিনার, ব্রাভো একা পেসার।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে উইকেটশিকারের তালিকায় দুইয়ে রশিদ। ৯৬ ম্যাচে ৯৬ ইনিংসে বোলিং করে নিয়েছেন ১৬১ উইকেট। ১২৬ ম্যাচে ১২৩ ইনিংসে বোলিং করে ১৬৪ উইকেট নিয়ে শীর্ষে সাবেক কিউই পেসার টিম সাউদি। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হওয়ার দৌড়ে রশিদ এগিয়ে। ১২৯ ম্যাচে ১২৬ ইনিংসে ১৪৯ উইকেট নিয়ে তিনে সাকিব।